মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

আইসিজির বিবৃতি: শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা ক্ষীণ

মুক্তবাণী ডেস্ক: ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা এখন অত্যন্ত ক্ষীণ বলে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)।

সোমবার শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর এক বিবৃতিতে সংস্থাটির বাংলাদেশবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক থমাস কিন বলেন, এই রায়ের রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া তাৎপর্যপূর্ণ।

থমাস কিনের মতে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত রায়টি বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে স্বাগত হবে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত নৃশংসতার জন্য তার দায়বদ্ধতা নিয়ে জনসাধারণের মনে কোনো সন্দেহ নেই।

তিনি উল্লেখ করেন, জাতিসংঘের তদন্তে ইতোমধ্যে প্রমাণ হয়েছে যে সেই দমনপীড়নে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এটি রাজনৈতিক নেতৃত্বের পূর্ণ জ্ঞান, সমন্বয় ও নির্দেশনার মাধ্যমেই ঘটেছিল। এ ঘটনায় শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিশেষভাবে অভিযুক্ত হন। ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়ায় শেখ হাসিনার কথোপকথনের রেকর্ড, সাবেক পুলিশপ্রধানের সাক্ষ্যসহ আরও বহু প্রমাণ উপস্থাপিত হয়েছে। তবে বিচার প্রক্রিয়ার কিছু দিক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আইসিজি।

থমাস কিন বলেন, আসামির অনুপস্থিতিতে বিচার সাধারণত বিতর্ক সৃষ্টি করে। এ ক্ষেত্রে দ্রুত শুনানি পরিচালনার কারণে বিচারের ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এসব সমালোচনা বাংলাদেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘদিনের চ্যালেঞ্জকে প্রতিফলিত করে, যা অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পরও যথেষ্টভাবে মোকাবিলা করতে পারেনি।

এই রায়ের রাজনৈতিক তাৎপর্যকে ‘সুদূরপ্রসারী’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন থমাস কিন।

তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা এখন ক্ষীণ। যতদিন তিনি আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানাবেন, ততদিন দলটির জন্য রাজনৈতিক অঙ্গনে ফেরার পথ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কম। সাম্প্রতিক সময়ে ককটেল বিস্ফোরণ এবং আওয়ামী লীগের ডাকা শাটডাউনের মতো ঘটনাগুলো দেশজুড়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এসব ঘটনা আরও বাড়তে পারে।

আইসিজির পরামর্শ অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের উচিত সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা। একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারেরও উচিত দলটির সমর্থকদের বিরুদ্ধে কঠোর দমনপীড়ন এড়িয়ে চলা।