মুক্তবাণী ডেস্ক: চব্বিশের জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ (মঙ্গলবার) ১৫তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ মামলায় সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশীদসহ মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ হচ্ছে।
অন্য দুই সদস্য হলেন- অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো: মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। আজ ট্রাইব্যুনালে দুইজন সাক্ষীর জবানবন্দি নেয়ার কথা রয়েছে। আজ ট্রাইব্যুনালে দুইজন সাক্ষীর জবানবন্দি নেয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে গত ১৬ নভেম্বর মিঠাপুকুর থানার ওসি মো. নূরে আলম সিদ্দিক ১৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন। তিনি গত বছরের ১৬ জুলাইয়ের ঘটনার পূর্ণ বিবরণ তুলে ধরেন। পরে তাকে জেরা করেন পলাতক ২৪ জনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীসহ উপস্থিত আসামিদের পক্ষের আইনজীবীরা।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করছেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। তার সঙ্গে রয়েছেন প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার, মঈনুল করিম, সাইমুম রেজা তালুকদার, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা।
এর আগে ১৩ নভেম্বর প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে জবানবন্দি দেন পুলিশের নায়েক আবু বকর সিদ্দিক। ১২ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন এসআই (সশস্ত্র) মো. আশরাফুল ইসলাম।
তিনি জানান, রংপুর কোতোয়ালি জোনের তৎকালীন এসি মো. আরিফুজ্জামান ও তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলামের নির্দেশে চালানো গুলিতে আবু সাঈদ শহীদ হন। ১১ নভেম্বর জবানবন্দি দেন রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান আহমেদ, যিনি প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনকারীদের একজন ছিলেন। ১০ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন বেরোবির শিক্ষার্থী আকিব রেজা খান, যিনি হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন।
এ মামলায় যথাক্রমে ৪ নভেম্বর, ২১ ও ১৩ অক্টোবর সাক্ষী হাজির না হওয়ায় তিনবার সময় পেছানো হয়। গত ৬ অক্টোবর নবম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে পুলিশের দুই উপপরিদর্শক এসআই রফিক ও এসআই রায়হানুল রাজ দুলাল জবানবন্দি দেন। এর আগে ২৮ আগস্ট আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। একই দিন সাংবাদিক মঈনুল হকও সাক্ষ্য দেন।
গ্রেপ্তার ছয় আসামি হলেন এএসআই আমির হোসেন, বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। তাদের উপস্থিতিতেই সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
গত ২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এর আগে ৬ আগস্ট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ফর্মাল চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তবে সাবেক ভিসিসহ ২৪ জন আসামি এখনও পলাতক রয়েছেন। তাদের পক্ষে গত ২২ জুলাই রাষ্ট্রনিযুক্ত চারজন আইনজীবী নিয়োগ করা হয়।
৩০ জুলাই পলাতক আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা। এর মধ্যে পাঁচজনের হয়ে লড়েন আইনজীবী সুজাত মিয়া। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে ছিলেন মামুনুর রশীদ। এছাড়া শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত জাহান ও শহিদুল ইসলাম। ২৯ জুলাই তিন আসামির পক্ষে শুনানি হয়। এর মধ্যে শরিফুলের হয়ে লড়েন আইনজীবী আমিনুল গণি টিটো, কনস্টেবল সুজনের পক্ষে আজিজুর রহমান দুলু এবং ইমরানের পক্ষে সালাহউদ্দিন রিগ্যান।
২৮ জুলাই প্রসিকিউশন অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করে। ৩০ জুন ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয়। আর ২৪ জুন তদন্ত সংস্থা প্রতিবেদন জমা দেয়। এ মামলায় মোট সাক্ষী ৬২ জন।