শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৩ সফর, ১৪৪৭ হিজরি

আমের রাজ্যে চাষির স্বপ্ন

অনলাইন ডেস্ক : বাংলার বুকে এক টুকরো আমের রাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ। গাছের শাখায় শাখায় ঝুলে আছে রসালো কাঁচা আম। প্রকৃতি যেন আপন হাতে সাজিয়েছে এই রাজ্য। জেলার উর্বর মাটি, অনুকূল জলবায়ু এবং কৃষকের অভিজ্ঞতা মিলিয়ে এখানে উৎপন্ন হয় বিশ্বের অন্যতম সুস্বাদু ও সুগন্ধি আম।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শুধু একটি জেলা নয়। শত শত বছর ধরে এখানকার মাটি ও মানুষের বন্ধনে যে ফলটি হয়ে উঠেছে পরিচয়ের প্রতীক, তা হলো আম। বৃটিশ আমল থেকেই এখানে পরিকল্পিত ভাবে আম চাষের সূচনা হয়।

এ জেলা দেশের অন্যতম প্রধান আম উৎপাদনকারী অঞ্চল। জেলার শিবগঞ্জ, ভোলাহাট, গোমস্তাপুর, নাচোল ও সদর উপজেলায় বিস্তীর্ণ আম বাগান আছে। প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে এখানকার আম চাষিরা ক্ষীরসাপাত, হিমসাগর, ল্যাংড়া, ফজলি, আশ্বিনা, আম্রপালি, গোপালভোগসহ নানা জাতের আম উৎপাদন করেন।

আমগুলো শুধু দেশের বাজারেই নয়, বিদেশেও রপ্তানি হয়। যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জেলায় আছে বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম আমের পাইকারি বাজার ‘কানসাট আম বাজার’। যা শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নে অবস্থিত।

কানসাট আম বাজার বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম আমের পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিত। গ্রীষ্ম এলেই এখানে শুরু হয় উৎসবের আমেজ। মাঠে মাঠে, গাছে গাছে, বাড়ির আঙিনায়, হাটে-বাজারে সবখানেই শুধু আম আর আম।

আম চাষ শুধু একটি পেশা নয়। এ যেন মানুষের জীবনের ছন্দ, পরিবারের হাসি, সন্তানের শিক্ষার খরচ আর ভবিষ্যতের আশ্বাস। তবে সেই আনন্দময় রাজ্যে মাঝেমধ্যে হানা দেয় অজানা শঙ্কা। জলবায়ুর অনিশ্চয়তা, অসময়ে ঝড়-বৃষ্টি আর রোগবালাই চাষিদের কপালে ভাঁজ ফেলে দেয়। তবুও হাল ছাড়েন না চাষিরা।

আধুনিক প্রযুক্তি আর সরকারের সহায়তায় চাষিরা স্বপ্ন আঁকেন নতুন করে। কেননা আম কেবল একটি ফল নয়। ভালোবাসা, ইতিহাস, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের প্রতীক। এই আমের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। ছুঁয়ে যায় সবার মন। মনে করিয়ে দেয়, আমরা এক সোনালি রাজ্যের উত্তরাধিকারী।