মুক্তবাণী অনলাইন:
পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ইউনিফর্ম তৈরির জন্য আনা হয়েছে- এমন সন্দেহে বিপুল পরিমাণ থান কাপড়ের রোল ভর্তি একটি কাভার্ডভ্যান জব্দ করেছে চান্দগাঁও থানা পুলিশ।
সোমবার রাত ৯টার দিকে চান্দগাঁও থানাধীন বাহির সিগন্যাল (কালুর ঘাট) শিল্প এলাকার ওয়েল ফেব্রিক্স কারখানা থেকে কাপড়গুলো জব্দ করা হয়। এটি আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক এমপি আবদুচ ছালামের মালিকানাধীন গার্মেন্ট কারখানা। এ ঘটনায় চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের টিম ওয়েল ফেব্রিক্সে অভিযান চালিয়ে থান কাপড়ের রোলভর্তি একটি কাভার্ডভ্যান জব্দ করেছে। চারজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে।
এর আগে চট্টগ্রামের বিভিন্ন কারখানায় তিন দফা অভিযান চালিয়ে ৪৭ হাজার পিস ইউনিফর্ম জব্দ করেছিল নগর গোয়েন্দা ও পাহাড়তলী থানা পুলিশ। ওই সব ঘটনায় দুই গার্মেন্ট মালিক পুলিশ রিমান্ডে রয়েছেন।
সূত্র জানায়, ১৭ মে রাতে বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন ‘রিংভো অ্যাপারেলস’ নামে একটি পোশাক কারখানায় নগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২০ হাজার ৩০০ পিস ইউনিফর্ম জব্দ করে। অভিযানে কারখানার মালিক সাহেদুল ইসলাম ছাড়াও গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দার নামে আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। মংহলা সিন ওরফে মং নামে এক পাহাড়ি যুবক দুই কোটি টাকায় ওইসব ইউনিফর্ম তৈরির জন্য কারখানা মালিকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। এ ঘটনায় নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে এসব কাপড় বা ইউনিফর্ম কেএনএফের জন্য তৈরি করা হচ্ছিল বলে উল্লেখ করা হয়। ২৭ মে নগরীর পাহাড়তলী থানার ডিটি রোডে অবস্থিত ‘নুর ফ্যাশন অ্যান্ড গার্মেন্টস’ নামে আরেকটি গার্মেন্ট কারখানায় অভিযান চালিয়ে আরও ১৫ হাজার ইউনিফর্ম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মতিউর রহমান নামে এক গার্মেন্টস মালিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ৫০ লাখ টাকার চুক্তিতে নুর ফ্যাশন কেএনএফের জন্য এসব ইউনিফর্ম তৈরি করছিল। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মতিউর রহমানকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এর আগে সৈয়দা সালেহা পারভীন নামে আরেক গার্মেন্ট মালিককে ৬ দিনের রিমান্ডে আনা হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন আলাদা রাজ্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পাহাড়ে বেশ কয়েক বছর ধরে কাজ করছে। সংগঠনের জন্য অর্থ যোগান দিতে তারা ব্যাংক ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও মুক্তিপণের মতো অপরাধ করে আলোচনায় আসে।