আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলমান সংঘাতে ইসরাইলি সরকারকে যে কোনো ধরনের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহকারী দেশ ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের সঙ্গে জড়িত বলে বিবেচিত হবে, পাশাপাশি তারা ইরানের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে—এমনটাই জানিয়েছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর সক্রিয় যোদ্ধাদের প্রধান কার্যালয় ‘খাতাম আল-আম্বিয়া কেন্দ্রীয় সদর দফতর’ (কেসিএইচকিউ)।-খবর তাসনিম নিউজের।
শনিবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইলি সরকার বিশ্বের অন্যতম এবং ব্যয়বহুল ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অধিকারী। তবুও তারা ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন আক্রমণ ঠেকাতে পারেনি। তারা নিজেদের রাডার এবং বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষমতার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হারিয়েছে। একইসঙ্গে গোলাবারুদ ও অস্ত্রের ঘাটতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। তবে তারা যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সহায়তা পেয়ে এসেছে।
এতে আরও বলা হয়, ইসরাইলি সরকারকে সহায়তা করার জন্য আকাশ বা সমুদ্রপথে যে কোনো ধরণের সামরিক সরঞ্জাম বা রাডার সরবরাহ করলে, ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন যুদ্ধে সেই দেশ সরাসরি অংশীদার হিসেবে বিবেচিত হবে। পরবর্তীতে সেই দেশ ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর জন্য বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।
গত ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণে যায় ইসরাইল। তারা দেশটির পারমাণবিক, সামরিক এবং আবাসিক স্থাপনাগুলিতে বিমান হামলা চালায়। এতে ৪০০ জনেরও বেশি ইরানি নিহত হন, যাদের মধ্যে শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
এরপরেই পালটা আক্রমণ শুরু করে ইরানের সামরিক বাহিনী। অপারেশন ট্রু প্রমিজ ৩-এর অংশ হিসেবে ২১ জুন পর্যন্ত ইসরাইলের বিরুদ্ধে ১৮টি প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তারা।
সবশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই খবর ঘটা করে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের এ ভূমিকায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে ইসরাইল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশংসায় মেতেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য।
তবে মার্কিন মুলুকেই ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে পাওয়া গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। দেশটির রাজনীতিবিদসহ সাধারণ মানুষের একটি অংশ ট্রাম্পের সমালোচনায় মেতেছেন। তাদের মুখে শোনা গেছে শান্তির বার্তা ‘নো মোর ওয়্যার’।
উল্লেখ্য, ইরান-ইসরাইল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ এবং কেসিএইচকিউ’র হুঁশিয়ারি— এখন দেখার বিষয়, নিজেদের দেওয়া বিবৃতি কতটা আমলে নেয় ইরান এবং পালটা প্রতিক্রিয়ায় কী করে তারা। আপাতত বিশ্ববাসীর শঙ্কাময় দৃষ্টি সেদিকেই।