আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার প্রধান শহর গাজা সিটির বিভিন্ন এলাকার ধ্বংস্তূপ থেকে শনিবার সারা দিন ৯৪ জনের দেহাবশেষ উদ্ধার করেছেন গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।পরে দেহাবশেষগুলো গাজার প্রধান হাসপাতাল আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সের ফরেনসিক বিভাগকে হস্তান্তর করেন তারা।-সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি।
আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সের ফরেনসিক বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরে এসব দেহাবশেষ গাজা সিটির পার্শ্ববর্তী দেইর আল বালাহের শহীদ গোরস্তানে দাফন করা হয়।
এই ৯৪ জনের সবাই ইসরায়েলি বাহিনীর বোমার আঘাতে ধ্বংস হওয়া ভবনের জঞ্জালের তলায় চাপা পড়ে মরেছেন। গাজা উপত্যকায় পুরোদমে অনুসন্ধান চালালে এমন হাজারো মরদেহ ও ধ্বংসাবশেষ মিলবে বলে তুরস্কের সরকারি বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সিকে জানিয়েছেন গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫০ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পরদিন ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
সেই অভিযানে গাজার বিভিন্ন আবাসিক এলাকার শত শত বাড়িঘর, হাসপাতাল, স্কুল, দোকান-পাট, আশ্রয় ও পরিষেবাকেন্দ্রগুলোতে বোমাবর্ষণ করা হয়। বোমার আঘাতে ধ্বংসস্তূপের তলায় অনেকের মরদেহ চাপা পড়েছিল, যাদের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
২০২৫ সালে ১০ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধবিরতির দু’মাস পর ডিসেম্বর থেকে ধ্বংসস্তূপগুলোতে উদ্ধারকাজ শুরু করে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী। উদ্ধারকাজ শুরু করার পর এই প্রথম কোনো ধ্বংস্তূপ থেকে এক পরিবারের এতজন সদস্যের দেহাবশেষ মিলল।
হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের গত ২ বছরে গাজায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭০ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ। নিহত এবং আহতদের বড় অংশই নারী ও শিশু।
এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় ভবন ধ্বংসের জেরে গাজায় জমা হয়েছে শত শত টন আবর্জনা ও ধ্বংসাবশেষ। এই আবর্জনা সরানোও এখন একটি বিশাল চ্যালেঞ্জের ব্যাপার।