নিজস্ব প্রতিবেদক : সমাবেশের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ছাত্রদল। প্রস্তত হয়েছে মঞ্চ। ধীরে ধীরে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
রোববার (৩ আগস্ট) দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকালে সাড়ে ৯টায় সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখা যায় ছাত্রদলের নেতাকর্মী, মিডিয়াকর্মী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। তবে, সংগঠনটির নেতাকর্মীর উপস্থিতি খুব একটা বেশি ছিল না। অবশ্য সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সমাবেশ শুরুর আগে সমাবেশে না আসতে নেতাকর্মীদের অনুরোধ করা হয়েছে।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এ সমাবেশ শুরু হবে রোববার (৩ আগস্ট) দুপুর ২টায়। এতে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সমাবেশ স্থলে সরাসরি উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলসহ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে সমাবেশ সফল করতে গঠন করা হয়েছে প্রায় ৯০টি সাংগঠনিক টিম। দেশের সব জেলা ও মহানগরের নেতা-কর্মীরা সমাবেশে অংশ নেবে। সমাবেশে আসার জন্য দুইটা বিশেষ ট্রেন ভাড়া করা হয়েছে।
সমাবেশ উপলক্ষে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ছয় দফা নির্দেশনা দিয়েছে ছাত্রদল। এর মধ্যে রয়েছে— সমাবেশে কোনো ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে আসা যাবে না। সমাবেশের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক ইউনিটকে থাকতে হবে। কাঁটাবন মোড় থেকে আজিজ সুপার মার্কেট ও পিজি হাসপাতালের মাঝের গলি দিয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল পর্যন্ত অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিত পরিবহনকে চলাচলে সার্বিক সহায়তা করতে হবে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীকে বহনকারী কোনো ইউনিটের গাড়ি কোনো অবস্থাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না। ব্যক্তিগত শোডাউন ও মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না। সমাবেশ শেষে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের নির্ধারিত স্থান পরিষ্কার করে যেতে হবে।
কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীরা কোনো ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড বহন করেননি। রাতে সমাবেশস্থলে আসা নেতাকর্মীরা শাহবাগ জাদুঘরের সামনে ফুটপাত এবং সমাবেশের জন্য বানানো অস্থায়ী মঞ্চে রাতযাপন করেছেন। সকালে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে আশপাশে অবস্থান নেওয়া নেতাকর্মীরা।
এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে যে কোনো ধরনের জনদুর্ভোগের জন্য আগাম দুঃখ প্রকাশ করেছে ছাত্রদল। সংগঠনের দফতর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা) মো. জাহাঙ্গীর আলমের সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, গত জুন মাসে আমরা আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণায় শুরুতে ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করি; কিন্তু পরে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা ৩ আগস্ট শহিদ মিনারে তাদের সমাবেশ করার বিষয়ে আমাদের নেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে একাধিকবার যোগাযোগ ও অনুরোধ করেন।
শহিদ মিনারের সমাবেশের বিষয়ে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস থেকে অনুমতিও নিয়েছিলাম। এ দিনে শহিদ মিনারে সমাবেশ করার বিষয়ে আমরাই ছিলাম একমাত্র বৈধ দাবিদার; কিন্তু পরে একটি উদার, গণতান্ত্রিক, পরমতসহিষ্ণু, সব মত ও পথের সহাবস্থানে বিশ্বাসী ছাত্রসংগঠন হিসেবে আমরা শহিদ মিনারে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে শাহবাগে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ব্যস্ত রাজধানীতে কর্মদিবসে সমাবেশের জনভোগান্তি সম্পর্কে আমরা অবগত। তার পরও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এই গুরুত্বপূর্ণ স্মরণীয় দিনটিতে আমাদের ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির বৃহৎ ঐক্যের স্বার্থে বৃহত্তম ছাত্রসংগঠন হিসেবে দায়িত্বশীলতা ও উদারতার জায়গা থেকে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করতে হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা যে কোনো ধরনের জনদুর্ভোগের জন্য অগ্রিম দুঃখ প্রকাশ করছি। প্রত্যাশা করছি, নগরবাসী বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করবেন।