রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৮ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫ জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

তীব্র দহনে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, তাপমাত্রা রেকর্ড ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : তীব্র দহনে পুড়ে যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গা। বৈশাখ মাসের শেষের দিক, তবুও কালবৈশাখী নিয়ে স্বস্তির বার্তা দিতে পারছে না চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস। বরং তাপমাত্রার পারদ যে আরও উঁচুতে চড়তে পারে, তেমনই পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস। তাপপ্রবাহের মধ্যেই চুয়াডাঙ্গায় শনিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ এবং অতিতীব্র তাপ প্রবাহ বলে জানা গেছে।

শুক্রবার একই সময়ে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়েছে শূন্য দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচন্ড তাপপ্রবাহে জনজীবনে অস্বস্তি নেমে এসেছে। চরম গরম অনুভূত হওয়ায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। সাধারণ মানুষ ছাতা মাথায় অথবা রিকশায় চলাচল করছেন।

টানা তাপদাহের কারণে বেড়েছে জনজীবনে অস্বস্তি। এতে বেশি সমস্যায় পড়েছেন নিম্ন শ্রেণির খেটে-খাওয়া মানুষ। তারা এ ভ্যাপসা গরমে কাজ করতে পারছেন না। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে সূর্যের প্রখরতা ও ভ্যাপসা গরম। খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ খুব একটা বাইরে বের হচ্ছেন না। ফলে দুপুরের পর থেকে সড়কগুলো এক প্রকার ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাসনহাটি গ্রামের কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন, তীব্র রোদের মধ্যে মাঠে কাজ করতে খুব কষ্ট হয়। সূর্য ওঠার আগে থেকেই কাজ করছি, যাতে সূর্যের তেজ বাড়ার আগেই কাজ শেষ করে বাড়ী ফিরতে পারি।

শহরের হাসান চত্বর এলাকার ফল ব্যবসায়ী শাহজাহান, প্রচন্ড গরমে মানুষ অতিষ্ঠ। আসছে না ক্রেতারা। ঠিকমতো বেচাকেনাও হচ্ছে না। সূর্যের প্রখরতায় ফুটপাথে বসে থাকাও যাচ্ছে না। ব্যবসা-বাণিজ্য করাই দায়।

রিক্সা চালক খোকা মিয়া বলেন, গরমে শহরে মানুষের সংখ্যা কমে গেছে। তাই ভাড়াও ঠিকমতো হচ্ছে না। রাস্তা দিয়ে আগুনের মত আঁচ উঠছে।

স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, শনিবার বেলা ৩ টায় জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা দেশের সর্বোচ্চ মাপমাত্রা। একই সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৩ শতাংশ।

তিনি আরও জানান, পশ্চিম থেকে গরম হাওয়া প্রবেশ করায় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। আগামী কয়েকদিন এই অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে ১৪ মে থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে।
এই গরমে রোগব্যাধি থেকে রক্ষা পেতে কীভাবে চলতে হবে, সে বিষয়ে চিকিৎসকদের মতে, তাপপ্রবাহ চলাকালে প্রয়োজনীয় কাজ দিনের প্রথমার্ধে সেরে নিতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হওয়াই ভালো। প্রত্যেককেই পানিসহ বেশি বেশি তরল খাবার ও ফলমূল খেতে হবে। ভাজাপোড়া ও চা-কফি এড়িয়ে চলতে হবে। গরমজনিত রোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে।