আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষ করেছেন বলে জানিয়েছে তাস। এর মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টা তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বন্ধ কক্ষে বৈঠকে কাটান।
শুক্রবার গ্রিনিচ মান সময় বিকেল ৫টা ৫৪ মিনিটে (স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৫৪ মিনিট) পুতিনের বিমান আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজের একটি সামরিক ঘাঁটিতে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর দুই নেতা একসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের লিমুজিনে ওঠেন এবং সেখান থেকেই একান্ত আলোচনার মাধ্যমে শীর্ষ বৈঠকের সূচনা হয়।
বিমানবন্দরে সাক্ষাতের ১৫ মিনিট পর ক্ষুদ্র পরিসরের আনুষ্ঠানিক বৈঠক শুরু হয়, যা প্রায় তিন ঘণ্টা স্থায়ী হয়। এরপর দুই নেতা গণমাধ্যমের সামনে আসেন।
পরে রুশ প্রেসিডেন্ট কাছাকাছি একটি স্মৃতিসৌধ কবরস্থানে গিয়ে সোভিয়েত পাইলটদের কবরের কাছে ফুল অর্পণ করেন।
এটি ছিল প্রায় এক দশক পর পুতিনের যুক্তরাষ্ট্র সফর। এর আগে তিনি ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন।
এদিকে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলোচনায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিন্দুমাত্র নমনীয় হননি, যুদ্ধের ‘মূল কারণ’ নিয়ে কথা বলেছেন এবং অবস্থান পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত দেননি। হুমকির সুরে তিনি কিয়েভ ও ইউরোপীয় মিত্রদের সতর্কও করেছেন—তার টেনে আনা চলমান প্রক্রিয়ায় যেন তারা হস্তক্ষেপ না করে। ট্রাম্পকে ক্লান্ত ও বিরক্ত দেখাচ্ছিল।
সিএনএন বলেছে, আলোচিত বৈঠক শেষে পুতিনের দুটি বড় জয় আছে। প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্রে লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং প্রেসিডেন্টের বিশেষ গাড়ি ‘দ্য বিস্ট’-এ যাত্রা—যা একজন অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীর জন্য এক অসাধারণ ভাবমূর্তির পুনর্বাসন। এটি অনেক ইউক্রেনীয়ের জন্য ছিল ভয়াবহ দৃশ্য; আরও তিক্ত করেছে ক্রেমলিন প্রধানের মন্তব্য, যেখানে তিনি ইউক্রেনকে ‘ভ্রাতৃপ্রতিম’ দেশ বলেছেন—তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে তার সেনারা সেখানে সাধারণ মানুষ হত্যা করলেও।
দ্বিতীয় জয়টি হলো সময়। পুতিন তার বাহিনীকে ফ্রন্টলাইনে অগ্রসর হওয়ার জন্য আরও সময় কিনে নিয়েছেন। ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হয়ে আসন্ন দিনে গৌণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।