রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৭ মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

“দায় অস্বীকার না করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছি, কিন্তু প্রশাসন কি যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে?” : যুবদল সভাপতি

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে (৩৯) নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় মামলার এজাহারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যুবদল। নিহতের পরিবার যাদের আসামি করেছিল, সেই তিনজনকে বাদ দিয়ে নতুন তিনজনকে অন্তর্ভুক্ত করায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংগঠনটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না।

শনিবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মুন্না বলেন, “ঘটনা ঘটেছে বুধবার, অথচ তা প্রচারিত হয়েছে শুক্রবার। দুই দিনের ব্যবধানে প্রচারে যে বিলম্ব, তার কারণ খুঁজে বের করা জরুরি। পাশাপাশি জানতে চাই, কেন পরিবার থেকে যাদের আসামি করা হয়েছিল, তাদের বাদ দিয়ে নতুন তিনজনের নাম অন্তর্ভুক্ত হলো? কারা এটা করল, আর কী উদ্দেশ্যে?”

সংবাদ সম্মেলনে নিহত লাল চাঁদের বড় বোনের মেয়ে বীথি আক্তারের বক্তব্য উল্লেখ করে মুন্না বলেন, “পরিবারের অভিযোগ—এজাহারে তাদের দেওয়া নামের কেউ নেই। অথচ সিসিটিভি ফুটেজে যাদের দেখা গেছে, সেই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা মামলার প্রধান আসামির তালিকায় নেই। যারা সরাসরি হামলা চালিয়েছে, তারা আজও ধরাছোঁয়ার বাইরে।”

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে যাঁদের দেখা গেছে, আশ্চর্যজনকভাবে তাঁদের মামলার প্রধান আসামি করা হয়নি। যাঁরা প্রাণঘাতী আঘাতগুলো করেছেন, তাঁরা এখনো গ্রেপ্তার হননি। এর কারণ বোধগম্য নয়।’

যুবদলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্নে মুন্না বলেন, “আমরা দায় অস্বীকার করিনি। কোনো ঘটনা ঘটলে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছি। গতকাল ৫ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত এক বছরের মধ্যে হাজারো নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করেছি। কিন্তু প্রশাসন কি তাদের বিষয়ে যথাযথ আইনি বা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েছে? না নিয়ে থাকলে কেন নেয়নি, তা জানতে চাচ্ছি।”

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন যুবদল সভাপতি। তার ভাষায়, “গতকাল খুলনায় বহিষ্কৃত এক যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, এমনকি রগ কেটে হত্যা করা হয়েছে। অথচ জাতীয় গণমাধ্যমে বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সে অর্থে কোনো প্রতিবাদ নেই।”

তিনি আরও জানান, চাঁদপুরে খুতবা দেওয়ার সময় এক ইমামের ওপর ‘নারকীয় কায়দায়’ হামলা হয়েছে। এমন হামলা একটি ‘বিশেষ সংগঠনের’ সহিংস রাজনীতির ধারাবাহিকতা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তার দাবি, “খুলনা ও চাঁদপুরের ঘটনায় এই সংগঠনের সম্পৃক্ততা ছিল। এর আগেও কুয়েটের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পেছনে তাদের প্রত্যক্ষ ইন্ধন ছিল।”

প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণেই দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন মুন্না। তিনি বলেন, “একটি সুযোগসন্ধানী গোষ্ঠী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নির্বাচিত প্রতিবাদ করে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বিবৃতি দিচ্ছে।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান।