মুক্তবাণী অনলাইন : বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, দেশ মাতৃকার অখণ্ডতা রক্ষায় নবীন সৈনিকরা প্রয়োজনে তাদের জীবন দেবে, তবু দেশের এক ইঞ্চি মাটি হাতছাড়া হতে দেবে না।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বায়তুল ইজ্জতে বিজিবির ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, শৃঙ্খলা হচ্ছে সৈনিক জীবনের অলংকার। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যিনি কখনো পিছপা হন না, তিনিই প্রকৃত সৈনিক। সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা এবং পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি।
তিনি আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে প্রস্তুত বিজিবি। ইতোমধ্যে বিজিবির জনবল বাড়াতে আরও পাঁচ হাজার সদস্য নিয়োগের কাজ চলছে। ভারত থেকে সীমান্তে অব্যাহত পুশইন ঠেকানো হবে বলেও জানান তিনি।
এদিন বিজিবির ঐতিহ্যবাহী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে নবীন সৈনিকদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন তিনি। এ সময় বিজিটিসিঅ্যান্ডসির কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গাজী নাহিদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার ক্ষেত্রেও বিজিবি অত্যন্ত বিশ্বস্ততা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হচ্ছে। নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে বিজিবি মহাপরিচালক ‘মনোবল, ভ্রাতৃত্ববোধ, শৃঙ্খলা ও দক্ষতা’ বিজিবির এই চারটি মূলমন্ত্রে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে অর্পিত যে কোনো দায়িত্ব সুশৃঙ্খল ও সুচারুরূপে পালনের নির্দেশ দেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, নবীন সৈনিকরা কখনো দেশবাসীকে হতাশ ও নিরাশ করবে না। তাদের দেওয়া নিশ্চিদ্র নিরাপত্তাই দেশের মানুষের নির্বিঘ্নে ঘুম নিশ্চিত করবে। এই নবীন সৈনিকরাই হবে সীমান্তের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক।
নবীন নারী সৈনিকদের উদ্দেশে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মহিয়সী নারীদের অংশগ্রহণ, অবদান ও আত্মত্যাগ অবিস্মরণীয়। আজ নারীরা বিভিন্ন অঙ্গনে যথাযথ যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে।
মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে প্রতিনিয়ত পুশইন চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। এদের মধ্যে বাংলাদেশিসহ ভারতীয়রাও চলে আসছে। আমরা যত্রতত্র পুশইন ঠেকাতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে, এমনকি ভারতীয় হাই-কমিশনারের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ রাখছি।
অনুষ্ঠানে বিজিবি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।