রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৮ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫ জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচনের ডেট না দিলে বিএনপিই ঘোষণা দেবে : শামসুজ্জামান দুদু

খুলনা প্রতিনিধি : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) খুলনা মহানগর বিএনপির আয়োজিত ‘গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আমাদের নেতা বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। আপনি যদি ডেট দিতে না পারেন, আরেকটু অপেক্ষা করেন, আমরাই ডেট দিয়ে দেবো।”

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, “আপনাদের যারা কর্মচারী—পুলিশ, প্রশাসন যারা দেশের মানুষের অর্থে চলে; আর সেখানে আপনি যদি নববধূর মতো আচরণ করেন, তাহলে আমরা কী করবো? আমাদের তো একটা ডেট দরকার; দরকার না? এখন পাত্রী আমরা দেখতে গেছি, পছন্দ হয়েছে। একটা দিন বলতে হবে না। দিন না বললে আমরা কাউকে দাওয়াত দিতে পারবো না।”

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “তারেক রহমান চূড়ান্ত কথা বলেননি। যখন সারাদেশ স্থবির হয়ে যাবে, সেদিন বুঝবেন।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগর লবি, জেলা বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, মহানগর সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন প্রমুখ। বক্তব্য রাখেন সরকারি আযম খান কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী শেখ শামসাদ হোসেন আবিদ এবং চিকিৎসক হুমায়ারা মুসলিমা বাবলি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, “যদি বিএনপি ১৭ বছর আন্দোলনে না থাকতো, একমাসের আন্দোলনে হাসিনার পতন হতো না। আমরা যে আন্দোলন নিয়ে গর্ব করি, সেই ২৪ এর আন্দোলনকে যারা ছোট করছে, তাদের জন্য শত শত, হাজার হাজার ছোট ভাইবোনকে সহযোগিতার জন্য তারেক রহমান সেখানে পাঠিয়েছেন। বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে আহত-নিহত পরিবারের দায়িত্ব নেবে।”

তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে “নেতার নেতা” আখ্যা দিয়ে বলেন, “তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জাতির প্রত্যাশা পূরণ করেছিলেন। রাষ্ট্রক্ষমতার সাড়ে ৩ বছরে একটি টাকারও দুর্নীতি নেই। দেড়শ বছরেও তার কোনো দুর্নীতি খুঁজে পাওয়া যাবে না। মৃত্যুর পরও তার কোনো ব্যাংক ব্যালেন্স বা সম্পদ ছিল না। তিনি জাতিকে ‘বাংলাদেশি’ পরিচয়ে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।”

সরকারের সমালোচনা করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “ড. ইউনূস সংস্কারের কথা বলছেন, কিন্তু আগে তার নিজের সংস্কার দরকার। হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানো হয়নি। পদত্যাগ নাটক করেছেন। হাসিনার মতো বিনিয়োগ সম্মেলনের নামে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন।”

তিনি বলেন, “বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন ‘সবার আগে বাংলাদেশ’। আর ড. ইউনূস বলছেন, সবার আগে গ্রামীণ ব্যাংক, সবার আগে টাকা নয় ছয় মাসের, সবার আগে বিদেশে লোক পাঠাবো-লাইসেন্স নেব। তিনি রাষ্ট্রের আমন্ত্রণে কোথাও যাননি, ব্যবসার কাজে গেছেন।”

বক্তব্যের শেষাংশে তিনি বলেন, “সাম্য হত্যা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা গুপ্ত সংগঠন চালিয়েছে। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। জামায়াত ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তাদের স্ত্রীরা ভোট দিলে তা ধানের শীষে যাবে। তাই নারীসহ মানুষের অধিকার আদায়ে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”