সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৭ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৬ সফর, ১৪৪৭ হিজরি

পাকিস্তানে ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলা; ১৩ সেনা নিহত

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় একটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২৯ জন।

শনিবার দুপুরে সেনাবাহিনীর একটি গাড়িবহর লক্ষ্য করে বিস্ফোরকবোঝাই একটি গাড়ি হামলা চালালে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় এক সরকারি কর্মকর্তা জানান, সেনাবাহিনীর বহরের মধ্যে গাড়িটি ঢুকে পড়ার পরপরই বিস্ফোরণ ঘটে। হতাহতদের মধ্যে ১০ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।

বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের দু’টি বাড়ির ছাদ ধসে পড়ে, এতে ছয় শিশু আহত হয়। আহত সেনাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।

হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক তালেবানগোষ্ঠী তেহরিক-ই তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) উপশাখা ‘হাফিজ গুল বাহাদুর আর্মড গ্রুপ’।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের চার প্রদেশ ও তিন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তান— এ দু’টি প্রদেশে গত কয়েক বছরে সন্ত্রাসী তৎপরতা ও হামলার নাটকীয় উল্লম্ফন ঘটেছে। খাইবার পাখতুনখোয়া মূলত পাকিস্তানপন্থি তালেবানগোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ঘাঁটি অঞ্চল। অন্যদিকে বেলুচিস্তানে ব্যাপকভাবে তৎপর বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। দুই গোষ্ঠীরই চূড়ান্ত লক্ষ্য খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানকে পাকিস্তানের মানচিত্র থেকে বিচ্ছিন্ন করা।

২০২১ সালে তালেবানগোষ্ঠী কাবুলে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর  থেকে সন্ত্রাসী হামলার উল্লম্ফন ঘটেছে হচ্ছে পাকিস্তানে। গত বছর ২০২৪ সাল ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ বছর। ২০২৪ সালের বছরজুড়ে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা ৪৪টি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। শতকরা হিসেবে গত এক দশকের মধ্যে ২০২৪ সালে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার হার ছিল ৪০ শতাংশ বেশি।

এসব হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬৮৫ জন সেনা এবং ৯২৭ জন বেসমরিক মানুষ। বিপরীতে গত বছর সেনা-পুলিশ যৌথ অভিযানে নিহত হয়েছে ৯৩৪ জন সন্ত্রাসী।