রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৮ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫ জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

পানিবন্দি সেন্টমার্টিন : সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ, সহায়তা প্রদান

কক্সবাজার প্রতিনিধি : মহেশখালীর মাতারবাড়িসহ বেশকিছু এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকেছে। তবে সে পানি আবার ভাটার সময় নেমে যাচ্ছে। এছাড়া টেকনাফ সেন্টমার্টিনেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ উপজেলাগুলোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক কুতুবদিয়া ও মহেশখালীতে ৫ টন চাল ও অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

তবে সেন্টমার্টিনের বিষয়টি আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়াার আগেই ৭৬ হাজার কেজি চাল ও ১০০ পরিবারের জন্য ফুড প্যাকেজ পাঠানো হয়েছে।”

এছাড়া ঝড় বৃষ্টি কমে সমুদ্র শান্ত হলে সেন্টমার্টিনবাসীর জন্য আরও কিছু খাদ্য সহায়তা পাঠানোর কথাও জানান তিনি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ আর মৌসুমি বড় জোয়ারের সাথে ভারী বৃষ্টিতে সেন্টমার্টিন দ্বীপ প্রায় ডুবে গেছে। দ্বীপের সুইস গেইট খালটি খনন না থাকার কারণে পানি বন্দী হয়ে মাদমবলীয়া, কোনার পাড়া, মরংচড়া, লম্বাঘর, পুর্বপাড়া,গলাচিপা, হলবইন্না, দক্ষিণ পাড়া, উত্তরাংশসহ দ্বীপের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। জোয়ারের পানি ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হয়ে দ্বীপের চারপাশে দিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। লবণাক্ত হয়ে গেছে টিউবওয়েল ও কূপের পানি।
এছাড়া সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে ঘাটে নোঙরে থাকা অন্তত ছোট-বড় ছয়টি মাছ ধরার ট্রলার বিধ্বস্ত হয়েছে।
বৈরি আবহাওয়ার কারণে ২৬শে মে থেকে আজ ৩১শে মে পর্যন্ত টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ পথে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে দ্বীপে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা তৈয়ব উল্লাহ বলেন, বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ থেকে দিনদিন পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে পৃথিবীর নিম্নাঞ্চল দেশগুলোতে পানি ভাড়ছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপে টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় এবারের জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপের চারপাশ থেকে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। জীবনে কখনো এতো বড় জলোচ্ছ্বাস আমি দেখিনি। দ্বীপের নিম্নাঞ্চলে থাকা প্রায় ৫০-৬০ টা বাড়িতে পানি ঢুকেছে। আরো অনেক বাড়ির সামনে জোয়ারের পানি চলে এসেছে। আমি দ্রুত একটা টেকসই বেড়িবাঁধ চাই। এছাড়া দ্বীপ রক্ষার বিকল্প নাই।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, বঙ্গোপসাগরে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জোয়ারের পানি সেন্টমার্টিন দ্বীপের লোকালয়ে ডুকে পড়েছে। ঘাটে নোঙরে থাকা মাছ ধরার ট্রলার বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পেয়েছি। আতঙ্কের কিছু নেই, সেন্টমার্টিনের জনপ্রতিনিধিরা সবাই একযোগে কাজ করছেন। কোনো ধরনের সমস্যা হলে লোকজন সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এনে রাখা হবে। আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে এখনো লোকজনকে সরিয়ে আনার মতো তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
তিনি আরও বলেন, গেল ৫ দিন ধরে ওয়েদার খারাপ। সেন্টমার্টিনে মালবাহী ট্রলারগুলো যেতে পারেনি। যার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও খাদ্য সংকটের দিকে যাচ্ছে। আশা করি, আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে। নৌবাহিনীর সাথে কথা হয়েছে দ্রুত খাদ্য পণ্যবাহীসহ স্থানীয় ট্রলারগুলো সেন্টমার্টিনে যাবে।