খুলনা প্রতিনিধি : ভারতে অর্থ পাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় খুলনার একটি আদালত মেসার্স শেখ ব্রাদার্সের কর্ণধার এসএম হাফিজুর রহমানকে দুই ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। রবিবার (২৫ মে) খুলনার বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে একইসঙ্গে আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। তবে রায় ঘোষণার সময় আসামি হাফিজুর রহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন না বলে জানান আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. ইয়াছিন আলী।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, খুলনার মুন্সিপাড়া প্রথম গলির বাসিন্দা এবং যশোরের কোতোয়ালী থানার ইশারাত আলীর ছেলে এসএম হাফিজুর রহমান ২০০০ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে আইএফআইসি ব্যাংক, খুলনা শাখা থেকে মোট চারটি এলসি (Letter of Credit) খুলেছিলেন। লক্ষ্য ছিল ভারত থেকে কস্টিক সোডা আমদানি।
তবে পরে তদন্তে দেখা যায়, হাফিজুর রহমান কোনও কস্টিক সোডা আমদানি না করেই আইএফআইসি ব্যাংকে জাল ও ভুয়া আমদানি রেকর্ড জমা দেন। এসব ভুয়া বিল অফ এন্ট্রি ও অন্যান্য নথিপত্রের মাধ্যমে তিনি ব্যাংক থেকে বৈদেশিক মুদ্রা উত্তোলন করে ভারতে পাচার করেন। মোট পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ১৯ হাজার মার্কিন ডলার, যার মূল্য বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৭৫ টাকা।
২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক এসএম শামীম বাদী হয়ে খুলনা থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৯ এপ্রিল দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল হাসেম হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
এরপর ২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর আদালতে আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে চার্জ গঠন করা হয়।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) সেলিম আল আজাদ বলেন, “আসামি হাফিজুর রহমান ভারত থেকে পণ্য আমদানির নামে আইএফআইসি ব্যাংক থেকে ভুয়া বিল অফ এন্ট্রি দাখিল করে বিদেশে অর্থ পাচার করেন। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, তিনি প্রতিটি নথিপত্র জালিয়াতি করে পুরো লেনদেন পরিচালনা করেছেন। আদালতের রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসামি পলাতক থাকায় গ্রেপ্তারের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় ওয়ারেন্ট পাঠানো হয়েছে। রায় কার্য করে আইনানুগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে দুদক ও পুলিশ।