রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৮ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫ জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ : স্পটলাইটে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

পাকিস্তানে সেনা অভিযান শুরু করেছে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, মঙ্গলবার মধ্য রাতে শুরু হওয়া ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামের এই অভিযান কতদূর পর্যন্ত যাবে— তা নির্ধারনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান সৈয়দ আসিম মুনির।

মঙ্গলবারের অভিযান শুরুর পর নিজ দেশের অভ্যন্তরে সেনাপ্রধানের ওপর চাপ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার প্রধান কারণ পাকিস্তানের জনজীবনে সেনাবাহিনীর প্রভাব গভীর এবং সেনাপ্রধান হিসেবে আসিম মুনিরের নিয়োগ ছিল বিতর্কিত।

গত ১৭ এপ্রিল প্রবাসী পাকিস্তানিদের এক সভায় পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বলেছিলেন, কাশ্মির হলো পাকিস্তানের গলার ধমনী এবং কোনো পাকিস্তানি তা কখনও ভুলবে না। পাশাপাশি ভারতের জম্মু ও কাশ্মিরের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের প্রতি দৃঢ় সমর্থনও জানিয়েছিলেন তিনি।

তার এই বক্তব্য দেওয়ার ৫ দিনের মাথায়, এপ্রিল ভারতের জম্মু ও কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামে পর্যটকদের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা। এতে নিহত হন ২৫ জন পর্যটক। নিহতদের অধিকাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। পরে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের একটি গোষ্ঠী এ হামলার দায়স্বীকার করে। এই টিআরএফ পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার একটি উপশাখা।

এই ঘটনা নিয়ে দুই সপ্তাহ উত্তেজনা চলার পর বুধবার মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সামরিক বাহিনী। এই হামলায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী মাত্র ২৫ মিনিটে অন্তত ২৪ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে পাকিস্তানে। এতে পাকিস্তানে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারত।

যদিও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বলেছে, ভারতের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। অন্যদিকে, কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ভারত-শাসিত কাশ্মিরে অন্তত ১০ জন নিহত ও ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতীয় অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা জম্মু-কাশ্মিরে এখন পর্যন্ত তিনটি ভারতীয় বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন।

অস্ট্রেলিয়ার থিংকট্যাঙ্ক সংস্থা অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ম্যালকম ডেভিস সিএনএনকে বলেন, “আমার মনে, পাকিস্তান যদি এই হামলার পাল্টা প্রতিশোধ না নেয়— তাহলে পাকিস্তানের রাজনীতি, আমলাতন্ত্র এমনকি সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরেও আসিম মুনিরের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং প্রভাব ক্ষুণ্ন হবে।”

সিএনএনের সামরিক বিশ্লেষক কেড্রিক লেইটন বলেন, “অতীতে পাকিস্তানের যেসব সামরিক জেনারেল সরাসরি রাজনীতিতে জড়িয়েছেন, মুনির তাদের মানসিকতা ধারণ করেন। তিনি মরেন করেন যে তিনি নিজ দেশের সম্মান রক্ষা করছেন, কিন্তু তার এই দেশপ্রেমে সাম্প্রদায়ীক চিন্তাভাবনা ব্যাপকভাবে সক্রিয়।”

সূত্র : সিএনএন

এসএসএইচ.