বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২ পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির সাজা ঘোষণা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে বলে রায় দিয়েছে। প্রতিটি অভিযোগের ভিত্তিতে সাজা প্রদান করা হয়েছে।

প্রথম অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’, ‘রাজাকারের নাতি-পুতি’ বলে উল্লেখ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা ও সহায়তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নিরীহ ছাত্র-জনতার উপর ব্যাপক আক্রমণ চালায়। এই অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি প্রমাণিত হয়েছে। অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ দেওয়া এবং প্রতিরোধে ব্যর্থতার কারণে তাকে ‘ইমপ্রিসনমেন্ট টিল ন্যাচারাল ডেথ’ অর্থাৎ আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

তিনটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

  • দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্যার নির্দেশ দেন।
  • চতুর্থ অভিযোগে রাজধানীর চাঁনখারপুল এলাকায় গত বছরের ৫ আগস্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ছয়জনকে হত্যার ঘটনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
  • পঞ্চম অভিযোগে আশুলিয়ায় জীবিত একজনসহ মোট ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এছাড়া চাঁনখারপুলে ছয়জনকে হত্যা এবং আশুলিয়ায় জীবিত একজনসহ ছয়জনকে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

এই মামলার একমাত্র গ্রেফতারকৃত আসামি ছিলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি ট্রাইব্যুনালের ইতিহাসে প্রথম অ্যাপ্রুভার বা রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন। রায়ে বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। অপরাধের ব্যাপকতা ও গুরুতর প্রকৃতির কারণে তিনি সর্বোচ্চ শাস্তির যোগ্য হলেও মামলাকে অর্থবহ করে তোলার জন্য তার সহযোগিতা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ প্রকাশ করায় তাকে ন্যূনতম সাজা দেওয়া হয়েছে। এভাবে সাবেক এই আইজিপিকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছে ট্রাইব্যুনাল।