রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৮ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫ জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

‘মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত নই, উল্টো আমি নিজেই ভুক্তভোগী’

জেলা প্রতিনিধি

কুমিল্লা

৪ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫৬

যুক্তরাষ্ট্র নেওয়ার কথা বলে নেপালে নিয়ে জিম্মি করে ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুমিল্লা পশ্চিম অঞ্চল ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আশেক এলাহী।

সোমবার (৩ মার্চ) বিকেলে কুমিল্লা নগরীর টমছমব্রিজ এলাকায় একটি কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ উড়িয়ে দেন সাবেক এই শিবির নেতা।

সাংবাদিক সম্মেলনে আশেক এলাহী দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার কথা বলে নেপালে জিম্মি করে ৪৫ লাখ টাকা আদায় ও মানবপাচার নিয়ে তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তিনি মানবপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত নন। উল্টো তিনি নিজেও একজন ভুক্তভোগী। যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চেয়ে তিনি নিজেও প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

আশেক এলাহী বলেন, আমি ও তারেক আজিজ নোয়াখালীর জোবায়ের নামের এক দালালের খপ্পরে পড়ি। যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর পর টাকা পরিশোধ করার শর্তে ৪৫ লাখ টাকার চুক্তিতে আমরা সেখানে যেতে রাজি হই। কিন্তু নেপাল নিয়ে দালাল জোবায়ের তারেক আজিজের মতো আমাকেও জিম্মি করে ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা পরে এ ঘটনায় নেপালের বাংলাদেশ হাইকমিশনে মামলা করে দেশে আসি। ওই সময় তারেক আজিজ বাদী হয়ে নেপাল পুলিশ এবং নেপালে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে মানব পাচারকারী হিসেবে জোবায়েরের নামে অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের মধ্যে তারেক আজিজের স্বাক্ষরও রয়েছে। কিন্তু দেশে এসে তারেক আজিজ ও আমার এলাকা পাশাপাশি হওয়ার কারণে তারা আমাকে অন্যায়ভাবে দায়ী করেন এবং আমি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে মনোহরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে চুক্তি করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা শুরু করেন।

তারেকের পরিবারের সঙ্গে চুক্তি করে উপজেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি বিপ্লব ১০০ থেকে ১৫০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে আমার বাড়িতে ২০২৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর হামলা করেন এবং আমার মায়ের কাছ থেকে জোরপূর্বক চারটি খালি ব্যাংক চেক ও ২০টি খালি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। ২০২৪ সালের ১৭ মার্চ আমি বাড়িতে গেলে তারেকের বাবা কামাল হোসেন সন্ত্রাসী নিয়ে আমার বাড়িতে আবারও হামলা করেন এবং আমার চাচা মো. ইয়াছিনের কাছ থেকে পাঁচটি খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। খালি চেক ও খালি স্ট্যাম্প উদ্ধারের জন্য আমরা আদালতে মামলাও করেছি। পরে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে অবৈধভাবে নেওয়া চেক ও স্ট্যাম্প দিয়ে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা করেন। সেখানে প্রকৃত অভিযুক্ত জোবায়ের হোসেনকে আসামি করা হয়নি। দেশে আসার পর আমিসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী মতিঝিল থানায় জোবায়েরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। জোবায়েরের সঙ্গে এসব ঘটনায় কিশোরগঞ্জের মাসুদও জড়িত। জোবায়ের ও মাসুদ এখনো পলাতক।

প্রসঙ্গত, শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে তারেক আজিজ নামে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের এক তরুণ ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা আশেক এলাহীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন। তারেক আজিজ মনোহরগঞ্জ উপজেলার মৈশাতুয়া ইউনিয়নের খানাতুয়া গ্রামের মো. কামাল হোসেনের ছেলে। তারেক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার কথা বলে নেপাল নিয়ে জিম্মি করে তার পরিবারের কাছ থেকে ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আশেক এলাহী। সেসব অভিযোগের জবাব দিতে সোমবার বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সাবেক শিবির নেতা আশেক।

আরিফ আজগর/এমজেইউ