নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের মানুষ চায় ‘আগামী ডিসেম্বরের ভিতরেই নির্বাচন হতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক সাফজয়ী ফুটবলার আমিনুল হক।
শনিবার দিনব্যাপি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর এর পল্লবীর ৩ নং ওয়ার্ড, রূপনগর থানার ৭ নং ওয়ার্ড, দোয়ারীপাড়া, ৬ নং ওয়ার্ড, দক্ষিণখান থানা, উত্তরা পশ্চিম থানা ও ভাষাণটেক থানার বিভিন্ন স্পটে অসহায় ও দুস্তদের মাঝে রান্না করা খাবার ও শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমিনুল হক বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা বারবার আহ্বান করেছি – আপনারা দ্রুত সময়ের ভিতরে একটি নির্বাচন দেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়- গত ১৭ বছর স্বৈরাচার সরকার নির্বাচনের কথা শুনলে যেমনটি করে টালবাহানা করেছিল, অন্তবর্তী সরকারকেও দেখছি তারাও স্বৈরাচারের মতো টালবাহানা করছেন। বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনের সকল রাজনৈতিক দল এবং এদেশের মানুষ চায়- আগামী ডিসেম্বরের ভিতরেই নির্বাচন হতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাপান সফরে গিয়ে একটি দল ছাড়া আর কোনো দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় না বলে যে মন্তব্য করেছেন, তা সঠিক নয় বলে দাবি করে এ সময় তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি শুধু একাই নির্বাচন চায় না, বিএনপির সাথে যুগপৎ আন্দোলনের সকল রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সংগঠন ও সুশীল সমাজ এবং এদেশের সাধারণ মানুষ সকলেই একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়।
আমিনুল হক বলেন, যে নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই জনগণের সরকারই পারবে একমাত্র পরিপূর্ণ ভাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংষ্কার করতে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচার করতে। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে আওয়ামী পেত্মাতাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে।
নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে আমিনুল হক বলেন, গত ১৭ বছর এদেশের মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। বাংলাদেশের মানুষ এখন ভোট দিতে চায়। মানুষ তার নাগরিক অধিকার- ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়। গত ১৭ বছর এদেশের মানুষ আন্দোলন করেছে সংগ্রাম করেছে লড়াই করেছে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। সেই নির্বাচনের জন্য এদেশের মানুষ এখন অপেক্ষা করছে।
সংষ্কার ও স্বৈরাচারের বিচারের প্রসঙ্গে অন্তবর্তী সরকারের প্রতি অভিযোগ করে আমিনুল হক বলেন, আপনারা সংষ্কারের কথা বলেছেন কিন্তু আপনারা সংষ্কারের ধারের কাছেও নাই। আপনারা স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচারের কথা বলছেন, কিন্তু আপনারা তাদের বিচারের ধারের কাছেও নাই। কারণ আপনাদের ভিতরে স্বৈরাচারের ষড়যন্ত্রকারীরা ঢুকে গেছে। আপনারা স্বৈরাচারের কথা শুনছেন কিন্তু এদেশের জনগণের কথা শুনছেন না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহু সংস্কার করেছিলেন। আজকে যে সংষ্কার সেটা হচ্ছে- স্বৈরাচারের রেখে যাওয়া রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে দলীয় ও রাজনীতিকরণ করার কারনে। জিয়াউর রহমান সেই সময়ে বাংলাদেশকে নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে সংষ্কারের ধারাবাহিকতায় তিনি ১৯ দফার কর্মসূচি দিয়েছিলেন। আজকের রাজনৈতিক কঠিন সময়ে আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রুপরেখার কর্মপরিকল্পনা দিয়েছেন। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই বাংলাদেশের মানুষ তার পরিপূর্ণ নাগরিক অধিকার ফিরে পাবে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে আধুনিক বাংলাদেশের জনক হিসেবেও অভিহিত করেন তিনি। বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ করে, তিনি যেভাবে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন – আমরাও ঠিক একই ভাবে এই দেশের মানুষের পাশে থেকে এদেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাব।
এ সময় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এবিএমএ রাজ্জাক, আফাজ উদ্দিন আফাজ, মাহাবুব আলম মন্টু, মহানগর সদস্য আলী আকবর আলী, মোতালেব হোসেন রতন, আব্দুস সালাম সরকার, সাজ্জাদ হোসেন, দক্ষিণখান থানা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক হেলাল তালুকদার, যুগ্ম আহবায়ক আমিরুল ইসলাম বাবলু, দেওয়ান মো. নাজিম উদ্দীন, আনোয়ার হোসেন জমিদার, ছাত্রদল রূপনগর থানার সাধারণ সম্পাদক কাওছার মল্লিক প্রমুখ।