শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২১ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৯ মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

মিডেল ইস্ট আইয়ের নিবন্ধ : ইসরাইলের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুদ্ধবিরতির পর এবার ইসরাইলের সঙ্গে ইরান দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার মিডল ইস্ট আইয়ে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এমনটা দাবি করা হয়েছে।

নিবন্ধটি লিখেছেন মিনহো বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ এসলামি ও ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি সান মার্কোসের মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইব্রাহিম আল-মারাশি।

মতামতে তারা লেখেন, ইরান তাদের পুরোনো কৌশলগত ‘ধৈর্য ধরার নীতি’র আলোকে যুদ্ধবিরতির সময়কে সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। এই সময়ে দেশটি পারমাণবিক কৌশল পুনর্মূল্যায়ন, আঞ্চলিক মিত্রতা সম্প্রসারণ, এবং আন্তর্জাতিক দৃঢ়তার পরিসীমা পরীক্ষা করবে।

তারা দাবি করেছেন, এই সময়ে ইরানি পরিকল্পনাকারীরা তাদের প্রতিরোধ কৌশল পুনর্বিবেচনা করবেন—সম্ভবত অনিয়মিত নৌযুদ্ধ এবং সাইবার অপারেশন অন্তর্ভুক্ত করে—এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশোধ পরিকল্পনা তৈরি করবে।

এই বিরতির সুযোগে তেহরান গুরুত্বপূর্ণ তিনটি কাজ করার সুযোগ পাবে:

১. নেতৃত্ব পুনর্গঠন

২. অস্ত্র পুনঃসংস্থান

৩. আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অভিযানের পরিকল্পনা

উভয় লেখক মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই যুদ্ধকে ‘জয়’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এটি ছিল একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম সংক্ষিপ্ত যুদ্ধ।

তবে ইরানও বিজয়ের দাবি করেছে—যেমনটা তারা ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত চলা ইরান-ইরাক যুদ্ধের শেষেও করেছিল। সেটিই ছিল বিংশ শতাব্দীর দীর্ঘতম প্রচলিত যুদ্ধ, যেখানে ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনও বিজয়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

উভয় ক্ষেত্রেই ইরান নিজেকে ‘আক্রমণের শিকার’ পক্ষ হিসেবে তুলে ধরেছে এবং যুদ্ধগুলোকে ‘আরোপিত যুদ্ধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। ইরানের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ‘সবুজ সংকেত’ পেয়েই এসব যুদ্ধ শুরু হয়েছিল।

নিবন্ধে উভয় লেখক বলেছেন, উভয় যুদ্ধ শেষে ইরান ‘কৌশলগত ধৈর্য’ প্রদর্শন করে বিজয়ের ঘোষণা দেয়—এটি ছিল এমন এক সংযমের নীতি, যার মাধ্যমে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভারসাম্য নিজেদের দিকে টেনে আনার চেষ্টা করা হয়।

ইরান-ইরাক যুদ্ধের পর তারা অপেক্ষা করে, এবং সময় ও পরিস্থিতিকে নিজেদের পক্ষে কাজে লাগায়। লেখকদ্বয়ের দৃষ্টিতে, আজও সেই পুরনো কৌশলগত ধৈর্যই পুনরায় প্রয়োগ করছে তেহরান।