মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের কাওয়াদি গ্রামের পূর্ব পার্শ্বে দিয়ারা কুঞ্জনগর মৌজায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, মধ্য চররমজান বেগ মৌজার অনুমোদিত বালু মহালের সীমানা অতিক্রম করে এই এলাকায় ড্রেজার বসিয়ে নদীর তলদেশ খনন করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, যা সরাসরি ফসলি জমি ও বসতবাড়ির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাওয়াদি গ্রামের পূর্ব প্রান্তে প্রায় ২০টি ড্রেজার দিয়ে পানির নিচের জমি খনন করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উত্তোলিত বালু বাল্কহেডে করে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে ইতোমধ্যে অনেক ফসলি জমি ডুবে গেছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নির্ধারিত বালু মহালের সীমানা অতিক্রম করে কাওয়াদি গ্রামে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, “যেভাবে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ড্রেজার চালিয়ে বালু কাটা হচ্ছে, তাতে অচিরেই আমাদের গ্রামের ঘরবাড়ি ও পূর্বপুরুষদের ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে যাবে। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন, কিন্তু কেউ কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মধ্য চররমজান বেগ বালুমহালের ইজারাদার শাহাদাত হোসেন দাবি করেন, “কাওয়াদি এলাকা আমার ইজারাকৃত মহলের সীমানার মধ্যেই পড়ে। এডিসি, ইউএনও এবং এসিল্যান্ড গিয়ে বিষয়টি এলাকাবাসীকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। ঈদের পর আবারও সীমানা চিহ্নিত করে দেওয়া হবে।”
তবে সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কে এম হাসানুর রহমান। তিনি বলেন, “বালু মহাল ঘোষণার সময় সীমানা নির্ধারণ করা হয়। তবে কাওয়াদি এলাকাটি ওই সীমানার মধ্যে পড়ে কিনা, সেটা যাচাই করার দায়িত্ব নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডের।”
এদিকে বিষয়টি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট তানজীমুল বলেন, “আমরা নিয়মিত টহল পরিচালনা করি। যদি কোনো বালু মহাল নির্ধারিত সীমানা লঙ্ঘন করে বালু উত্তোলন করা হয়, তবে অবশ্যই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
স্থানীয়দের দাবি, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে কাওয়াদি গ্রামের বহু জমি ও ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ না হলে এই অঞ্চলে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিতে পারে।