রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৮ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫ জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

যশোরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি কর্মীকে হত্যা, আটক-৪

যশোর প্রতিনিধি : যশোরের শার্শায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জেরে তিন দিনের ব্যবধানে আরেক বিএনপিকর্মী লিটন হোসেনকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার লক্ষণপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে তাকে হত্যা করা হয়।
নিহত লিটন হোসেন ওই গ্রামের আজগর আলীর ছেলে। বুধবার (১১ জুন) দুপুরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে লাশের ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় আজগর আলী বাদী হয়ে বুধবার শার্শা থানায় ১৭জন নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। পরে শার্শা পুলিশ এ ঘটনায় এজাহারভুক্ত ২আসামিসহ ৪জনকে আটক করেছেন।
তারা হলেন, শার্শা দুর্গাপুর গ্রামের আজগর আলী (৩২) ও শমসের আলী (৪৫)। এছাড়া এজাহারভুক্ত আসামিদের সহযোগি হিসেবে দূর্গাপুর গ্রামের মৃত মুনসুর আলীর ছেলে আব্দুল হক মিয়া(৫৫) ও সামছুল হককে(৫২) আটক করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লিটন মঙ্গলবার রাতে তার বাড়ির পাশে বসেছিলেন। এ সময় প্রতিবেশী মমিনুর রহমানসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জেরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে লিটনের উপর হামলা চালায়। তারা লিটনকে বুকে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে আহত করে। এসময় লিটনের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে হামলাকারী পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত লিটনের বাবা আজগর আলী সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা আবদুল মমিন, সেলিম হোসেন ও রমজান আলীর সঙ্গে তাঁর ছেলে লিটনের দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক বিরোধ চলে আসছিল। তারা আগেও লিটনকে কয়েকবার মারধর করেছেন। ঈদের আগের দিন কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। এর জেরে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে।

শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান বলেন, নিহত লিটন বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী। পূর্বশত্রুতার জেরে সন্ত্রাসীরা তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্থানীয় আধিপত্য নিয়ে নিহত লিটনের সঙ্গে স্থানীয় সেলিম, রমজান, আজগরদের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় বিএনপির অনুসারী প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী পোস্টার টানানো নিয়ে সেলিম, রমজানদের সঙ্গে লিটনের মারামারি হয়। এর পর থেকে বিভিন্ন সময়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলে আসছিল। এর জেরে লিটনকে হত্যা করা হতে পারে।

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে লিটনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির বাবা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলার এজাহারভুক্ত দুই ও সহযোগি হিসেবে আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি জানান, নিহত লিটনের বিরুদ্ধে থানায় মাদক মামলা ছিল।
উল্লেখ্য যে, গত ৭ জুন ঈদের দিন রাতে আব্দুল হাই নামে এক বিএনপিকর্মীকে বোমা মেরে হত্যা করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে স্থানীয়রা জানান।