নিজস্ব প্রতিবেদক : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে চলনবিলে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনসহ ১১ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)। এসব বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের প্রায় ৫ হাজার কোটি, বৈদেশিক ঋণ ২ হাজার ৪২৮ কোটি এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, আইন কানুন মেনেই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনুমোদনের ক্ষেত্রে দুটি শর্ত দেওয়া হয়।এগুলো হলো- পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তিপত্র লাগবে এবং প্রকল্পটি যখন বাস্তবায়িত হবে তখন পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন মনিটরিং করবেন। যাতে পরিবেশের ক্ষতি খুব বেশি না হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেকোনো প্রকল্প করতে গেলেই পরিবেশের কিছু না কিছু ক্ষতি হবেই। আমাদের চেষ্টা করতে হবে কতটা কম ক্ষতি করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায়। সেই সঙ্গে কীভাবে পরিবেশ সম্মত পদ্ধতিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায় সেটি ভাবতে হবে। তবে বিকল্প থাকলে সেটিও চিন্তা করা দরকার। তবে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নিজস্ব ক্যাম্পাস খুবই প্রয়োজন। এটির ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের মতামত থাকলে ভালো হতো।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, আগামী ফেব্রুয়ারিতে যেহেতু জাতীয় নির্বাচন সেহেতু ডিসেম্বর, জানুয়ারির আগেই এডিপি সংশোধন করা হবে। আমরা আগামী সরকারকে বাজেটের একটা রূপরেখা দিয়ে যেতে চাই।
তিনি বলেন, চিনি শিল্প ও ইক্ষু চাষের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার মন্ত্রণালয় থেকে একটা সমীক্ষা করা হবে। সে হিসেবে ভবিষ্যতে কর্মপন্থা নির্ধারণ হবে। তবে সব চিনিকল সংস্কার হবে না। দু-একটি রেখে বাকিগুলো অন্য কোনো কাজে লাগানো হবে।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আমাদের ধারণা ওয়াশার ভূউপরিস্থ পানি সরবরাহ প্রকল্পে অনিয়ম রয়েছে। সেই সঙ্গে আছে ভুল পরিকল্পনা ও সমন্বয়হীনতা। এগুলো খতিয়ে দেখতে আইএমইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মেট্রোরেল প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজধানীতে মেট্রোরেল লাইন-৫-এর নর্থ ও সাউথ অংশে অনেক বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে। কিন্তু এখানে আমরা দুর্বল। কিছু করতে পারছি না। কারণ জাইকার সঙ্গে ঋণ চুক্তি হয়েছে। ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে। সেখানে কিছু করার নেই। তবুও চেষ্টা করা হচ্ছে কিছু করা যায় কিনা।
তিনি জানান, দেশের ৫টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ স্থাপনের প্রকল্প পাশ করা হয়েছে। তবে বলা হয়েছে- ডাক্তার ও জনবল যাতে আগেই নিয়োগ দেওয়া হয়। সেটি না হলে সুন্দর বিল্ডিং হবে, যন্ত্রপাতি আসবে। কিন্তু জনবলের অভাবে দিনের পর দিন পড়ে থেকে নষ্ট হবে।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হলো- আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলের টেকসই কৃষি উন্নয়ন, পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যমান শিল্প সমৃদ্ধ এলাকায় আউটডোর উপকেন্দ্রের আধুনিকায়ন এবং বিএমআর অব কেরু অ্যান্ড কেরু কোম্পানি প্রকল্প। আরও হলো- পাঁচটি নির্ধারিত মেডিকেল কলেজে আইসিইউ স্থাপন, আজিমপুর কলোনিতে সরকারি কর্মচারিদের জন্য বহুতল ফ্ল্যাট নির্মাণ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য দুটি বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ, ঢাকা ইনভারমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট। এছাড়া বান্দরবান এলাকায় নিরাপদ পানি সরবরাহ, চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন এবং উপজেলক পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্প।