আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে বাংলাভাষী হওয়ায় লোকজনকে ধরে নির্যাতন ও সীমান্ত পার করে দেওয়ার সমালোচনা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বাংলা ভাষায় কথা বললে বিভিন্ন রাজ্য থেকে বিতাড়ন করা হচ্ছে। অথচ দেশের কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিবেশী দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বহাল তবিয়তে রেখেছে নয়াদিল্লিতে।
শুক্রবার নিউ টাউনের ‘সুসম্পন্ন’ বহুতল পার্কিং কমপ্লেক্স উদ্বোধন শেষে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের বিজেপি সরকারকে উদ্দেশ্য করে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে এসব কথা বলেন তিনি। তবে বক্তব্যের কোনো পর্যায়ে শেখ হাসিনা বা মোদির নাম উচ্চারণ করেননি মমতা ।
শুধু বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে অনেক মানুষকে ভারত থেকে অবৈধভাবে সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হলেও শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীকে আশ্রয় দেওয়ায় এই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে ভিন রাজ্য থেকে নির্যাতন করা হচ্ছে, তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ প্রতিবেশী দেশে সাংবিধানিক সংকট দেখা দেওয়ায় সে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে দিল্লিতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এরপরও আমরা কোনোদিন কিছু বলেছি? বাংলায় কথা বললে বাংলাদেশি বলা হচ্ছে। ১৭ লাখ রোহিঙ্গা আছে কোথায় দেখান? রাজনীতি করলে নিজের মন ঠিক করতে হবে। কে তুমি হরিদাস পাল।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলায় দেড় কোটি বাইরের লোক কাজ করে, আমরা তো কোনোদিন কিছু বলি না। বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি । অথচ, বাংলা এশিয়ায় দ্বিতীয় ভাষা, আর পৃথিবীতে পঞ্চম- এটা স্মরণ রাখতে হবে।’
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । এরপর ভারতের মোদি সরকার নয়াদিল্লিতে তাকে আশ্রয় দেয়। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীও আছেন ভারতে। মেঘালয়, আসাম, কোচবিহার, ঘোজাডাঙ্গা, গেদে, হিলি, উত্তর চব্বিশ পরগনা, মালদা, বনগাঁ, বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে বহু আওয়ামী লীগ নেতা ভারতে আশ্রয় নেন। শেখ হাসিনার নাম না করলেও মূলত এই বিষয়টি বোঝাতে চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।