মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

হাসিনার রায়ে কল রেকর্ড ও জাতিসংঘের রিপোর্টে অগ্রাধিকার

মুক্তবাণী ডেস্ক: জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার কল রেকর্ড এবং জাতিসংঘের রিপোর্টকে রায়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এ নথিগুলোকে মামলার গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। ছয় ভাগে বিভক্ত ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পড়ছেন বিচারক।

সোমবার দুপুর ১২টা ৩৪ মিনিটে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল রায় পড়া শুরু করেন। এ সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এ মামলায় হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রসিকিউশন মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগ দাখিল করে। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার।

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে মূল অভিযোগ আনা হয়েছে যে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে শেখ হাসিনা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ও পদ্ধতিগত দমনপীড়ন চালানোর সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন। যা গণহত্যা, খুন এবং ভয়াবহ নির্যাতনের শামিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের সব বাহিনী, তার দল আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনগুলো—বিশেষ করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরাসরি নির্দেশ দেন। এ নির্দেশের ফলে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হন এবং ২৫ হাজারের বেশি আহত, অঙ্গহানি ও নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হন।

৫ আগস্ট এক দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসার সময় আশুলিয়ায় ছাত্রদের গুলি করে হত্যা করা হয় এবং লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। নিহতদের মধ্যে একজন জীবন্ত অবস্থায়ও পুড়িয়ে মারা হয়। এ ঘটনার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে।