মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

৫ ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট

মুক্তবাণী ডেস্ক: সংকটে পড়া পাঁচ বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ব্যাংকের সাধারণ বিনিয়োগকারী শহিদুল ইসলামের পক্ষে ব্যারিস্টার মাহসিব হোসাইন এ রিট দায়ের করেন। রিটে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে গত ৯ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সংকটে পড়া পাঁচ বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করার প্রস্তাব অনুমোদন করে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করে নতুন একটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

নতুন ব্যাংকের জন্য দুটি নাম প্রস্তাব করা হয়েছে- ‘ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক’ ও ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’। ব্যাংকটি পরিচালিত হবে বাণিজ্যিকভাবে ও পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ব্যাংকগুলো একীভূত করার ফলে কোনো কর্মচারী চাকরি হারাবেন না এবং কোনো আমানতকারীও আমানত হারাবেন না।

প্রাথমিকভাবে নতুন ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। পাঁচ ব্যাংকের সব দায় ও সম্পত্তি গ্রহণ করে নতুন ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা সরকার দেবে- ১০ হাজার কোটি টাকা নগদে এবং বাকি ১০ হাজার কোটি টাকা সুকুক বন্ড ছাড়ার মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।

সুকুক হলো শরিয়াহভিত্তিক একটি ইসলামি বন্ড, যা সুদযুক্ত বন্ডের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ আইনি দলিল বা চুক্তিপত্র।

এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের শেয়ার দিয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা মূলধনে রূপান্তর করা হবে বেইল-ইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। পরে রেজল্যুশন পরিকল্পনা অনুযায়ী তা পরিশোধ করা হবে আমানতকারীদের। বেইল-ইন প্রক্রিয়ায় আমানতকারী ও অন্যান্য পাওনাদারের ঋণের একাংশ বাতিল হয়ে শেয়ারে রূপান্তরিত হয়।

নতুন ব্যাংকটি প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রমালিকানাধীন হবে। পরে পর্যায়ক্রমে মালিকানা বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করা হবে। প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আশা করছি, পাঁচ বছরের মধ্যে ব্যাংকটি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, ব্যাংকটি সরকারি খাতে চলে যাওয়ায় গ্রাহকদের আতঙ্ক কমে আসবে। পাশাপাশি আতঙ্কিত ক্ষুদ্র গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার।