আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবকে ভারতের ‘বিশ্বস্ত বন্ধু ও কৌশলগত মিত্র’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মোদি এখন সৌদি আরব আছেন।
আরব নিউজকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, আমাদের অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা সীমাহীন। অনিশ্চয়তায় ভরা বিশ্বে আমাদের সম্পর্ক এক স্থিতিশীলতার স্তম্ভ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
২০১৯ সালে কৌশলগত অংশীদারিত্ব পরিষদ গঠনের পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বহুমাত্রিক রূপে প্রসারিত হয়েছে বলে জানান মোদি।
সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বের প্রশংসা করে মোদি বলেন, আপনার প্রতিটি সাক্ষাতে আমি গভীরভাবে মুগ্ধ হয়েছি। আপনার দূরদর্শী চিন্তাভাবনা, প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি এবং দেশের মানুষের স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকার অনন্য।
সৌদি আরব বর্তমানে ভারতের পঞ্চম বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। কৃষি, সার, জ্বালানি ও প্রযুক্তি খাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদনসহ উদীয়মান খাতগুলোতে যৌথ উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
সৌদি আরবের ২০৩০ বিশ্ব এক্সপো এবং ২০৩৪ ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে নির্বাচিত হওয়াকে ‘অত্যন্ত গর্বের’ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেন মোদি।
তিনি জানান, এই দুটি বৃহৎ ইভেন্ট সৌদির অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে গতিশীল করবে এবং ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জন্যও নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।
ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তায় সৌদির ভূমিকার কথা তুলে ধরে মোদি বলেন, শুধু তেল রফতানিকারক হিসেবেই নয়, সৌদির সঙ্গে যৌথ প্রকল্পের মাধ্যমে জ্বালানি সহযোগিতা আরও বিস্তৃত হচ্ছে। সৌদির সঙ্গে বিদ্যুৎ গ্রিড সংযোগ, সবুজ জ্বালানি এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি খাতেও পারস্পরিক উদ্যোগের প্রসার ঘটছে।
প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতেও দুই দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। সামরিক মহড়া, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান, সাইবার নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা শিল্পে বিনিয়োগে সৌদির অংশগ্রহণের আহ্বান জানান মোদি।
জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময় ঘোষিত ইন্ডিয়া মিডল ইস্ট ইউরোপ ইকোনোমিক করিডোর (আইএমইইইসি) প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে মোদি বলেন, এই করিডোর এশিয়া, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে নতুন সংযোগ গড়ে তুলবে—শুধু পণ্য নয়, বিদ্যুৎ, তথ্য এবং সবুজ জ্বালানির আদান-প্রদানেও এটি যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।
সৌদিতে অবস্থানরত ২৭ লাখ ভারতীয়কে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ‘বন্ধনের শক্তি’ বলে অভিহিত করেন মোদি।