মুক্তবাণী অনলাইন :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম শীর্ষনেতা জনাব মীর কাসেম আলী সাহেবের মেঝ মেয়ে Sumaiya Rabeya পিতার শাহাদাতের সময়ের বিশেষ কিছূ স্মৃতিচারণ করেছেন। দলের ভূমিকার ব্যাপারে কষ্টের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সেটা তুলে ধরা হলো :
“সংগঠনের দায়িত্বশীলদের পরিবার কি অটো জনশক্তি হয়ে যায়? তাহলে এত কষ্ট করে মান-উন্নয়নের চাপ কেন নিতে হয়? ইসলামী সংগঠনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হচ্ছে — এটা পরিবারকেন্দ্রিক না। আমাদেরও বাকিদের মতোই নিজেকে বাইয়াতের জন্য উপযুক্ত প্রমাণ করতে হয়েছে।
সত্যি কথা বলতে কী, যারা আন্দোলনের আদর্শের সৈনিক না, তাদের কাছে আব্বুর এই কুরবানি আসলেই অর্থহীন। এই যে আমাদের জান-মাল, আত্মসম্মান কুরবানি দিলাম, এটা একমাত্র দীনী চেতনা ছাড়া আর কোনোভাবেই জাস্টিফাই করা সম্ভব না।
আমার খুব কাছের এক বন্ধু, বিদেশি। তার ইসলামের জ্ঞান এত ভালো যে আমি প্রায়ই তার কাছে যেকোনো ইস্যুতে আটকে গেলে জানতে চাই। মালয়েশিয়ার অনেক নামীদামী ইসলামী কোর্সও সে ডিজাইন করেছে। ইসলামের এত অথেনটিক নলেজ রাখা মেয়েটি আব্বুর শাহাদাতের পর আমাকে বলেছিল: “তোমার বাবা কেন প্রেসিডেন্টের কাছে আপিল করলেন না? ইচ্ছা করে ফাঁসিতে যাওয়া তো সুইসাইডাল!” আমি অবাক হয়ে বলেছিলাম, তোমাকে এটা বুঝাতে হবে, আমি ভাবিনি।
আসলেই এটা ভাবা অনেক কঠিন। যে লেভেলের কুরবানি আমাদের করতে হয়েছে, সেটা আন্দোলনের কনসেপ্ট ছাড়া দুনিয়ার আর কোনো কিছুতেই জাস্টিফিকেশন সম্ভবই না।
তাহেরার স্ট্যাটাসে অনেকেই কষ্ট পান। পাওয়াটা জা-স্টিফাইড। কিন্তু প্রথমত, সে অনেকদিন ধরেই আন্দোলনের সাথে নেই। আর এটাও সত্যি, অন্য শহীদদের তুলনায় আমরা কাছের মানুষ, যাদের ওপর আব্বু আস্থা রেখেছিলেন, বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আসলে হাসিনার জুলুম সহ্য করা এত কঠিন ছিল না, যতটা কঠিন ছিল কাছের মানুষদের দ্বিমুখী আচরণ দেখা।
আমরা সবাই বড় হয়ে গেছি। যার যার পরিবার নিয়ে স্বাধীনভাবে আছি। তাই আমার ছোট বোনকেও হয়তো আগের মতো একটা কান মলা দিয়ে শাসন করার জায়গা নেই। অনেক সময় ট্রমা রেসপন্স বিপর্যয় শেষ হওয়ার পর আসে। যদি সত্যি শহীদ পরিবারকে আপন মনে করেন, তাহলে একটু মানবিক চোখে দেখবেন।
এইটুকুই অনুরোধ। ————–”
এসএসএইচ.