আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় রোববার বিকালে। শহরের মেট্রোপলিটন ডিটেনশন সেন্টারের বাইরে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদকে পুলিশ ‘অবৈধ জমায়েত’ ঘোষণা করে।
দিনভর বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বহু ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে লস অ্যাঞ্জেলেসে মোতায়েন করা হয় প্রায় ৩০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য, যাদেরকে তিনি ‘বিদ্রোহী জনতার’ মোকাবেলা করতে পাঠিয়েছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন ধরপাকড়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে ১০১ ফ্রিওয়ে অবরোধ করেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও অন্যান্য প্রকল্পাইল ছুড়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে এবং সন্ধ্যা ৫টার মধ্যে মহাসড়ক মুক্ত করে। ততক্ষণে শত শত মানুষ আশপাশের সড়কে অবস্থান নিতে শুরু করেন।
এর আগেই, বিকেল ৩টার দিকে লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ (এলএপিডি) ঘোষণা করে যে, আলামেদা এলাকার কারাগারের বাইরে থাকা এক দল বিক্ষোভকারী ‘অবৈধ জমায়েত’-এ রূপ নিয়েছে এবং গ্রেপ্তার শুরু হয়েছে।
এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এলএপিডি জানায়, ২য় স্ট্রিট থেকে আলিসো স্ট্রিট পর্যন্ত আলামেদা এলাকার জন্য অবৈধ জমায়েত ঘোষণা করা হয়েছে। ছত্রভঙ্গ হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার চলছে।
সিএনএন জানায়, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠিপেটা করে, ধাক্কা দেয় এবং ফ্ল্যাশ-বাংল ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে ভিড় ছত্রভঙ্গ করে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন ব্যাস (ডেমোক্র্যাট) ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সহিংসতাকারীদের জন্য কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তিনি এক্স-এ লিখেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করব। তবে সহিংসতা, ধ্বংস ও ভাঙচুর লস অ্যাঞ্জেলেসে সহ্য করা হবে না এবং দোষীদের সম্পূর্ণভাবে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।’
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসোমের কার্যালয় প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথকে একটি চিঠি পাঠিয়ে সশস্ত্র বাহিনী প্রত্যাহারের অনুরোধ করে।
রোববার ক্যাম্প ডেভিডে রওনা হওয়ার আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি সামরিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন, তবে কেন সে বৈঠক হচ্ছে তা স্পষ্ট করেননি।
সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণার পর্যায়ে যায়নি। কিন্তু এরপরই ট্রুথ সোশালে তিনি বিক্ষোভকারীদের ‘বিদ্রোহী জনতা’ বলে অভিহিত করেন।
তিনি লেখেন, ‘আমি হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম, প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ, এবং অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডিকে নির্দেশ দিচ্ছি যেন তারা সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ ও সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে লস অ্যাঞ্জেলেসকে অভিবাসী হামলা থেকে মুক্ত করে এবং এসব ‘মাইগ্রান্ট দাঙ্গা’ বন্ধ করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে, অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কার করা হবে, এবং লস অ্যাঞ্জেলেসকে মুক্ত করা হবে।’