বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১২ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৯ জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

সরকারি কলেজে নৈতিক অবক্ষয়, প্রকাশ্যে গাঁজা ও অশ্লীলতার ভিডিও ভাইরাল

ফেনী প্রতিনিধি : দাগনভূঞা সরকারি ইকবাল মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজে এইচএসসি পরিক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শেষে বিদায়ী শিক্ষার্থীদের একটি অংশের অশালীন কর্মকাণ্ড ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা ছড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, কলেজ চত্বরে সাউন্ড সিস্টেমে উচ্চস্বরে অশ্লীল গান চালিয়ে শিক্ষার্থীরা অঙ্গভঙ্গি করে নাচছে এবং প্রকাশ্যে গাঁজা ও সিগারেট সেবন করছে।

ঘটনাটি মুহূর্তেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে উপজেলাজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। সচেতন মহল থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ ঘটনাকে নিন্দনীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য কলঙ্কজনক বলে আখ্যা দেন।

ছাত্রশিবিরের কলেজ শাখার সভাপতি সফর আলি সম্রাট জানান, কলেজের আয়োজনে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল দুপুর ১২টার মধ্যেই শেষ হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই সাউন্ড সিস্টেম এনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে গান পরিবেশন শুরু করে। তিনি জানান, প্রিন্সিপাল বিষয়টি অস্বীকার করলে তিনি নিজেই অনুষ্ঠান বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। ভিডিওটি দেখে তিনি মর্মাহত হয়ে অশালীন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুমও একইভাবে দোয়া মাহফিল শেষে ক্যাম্পাস ত্যাগ করার কথা জানিয়ে বলেন, “রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ভিডিও দেখে আমি হতবাক হয়েছি। এমন অসংযত আচরণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছে।”

দাগনভূঞা একাডেমির শিক্ষক ও উপজেলা জামায়াতের আমীর গাজী সালেহ উদ্দিন বলেন, “এ ধরনের নৈতিক অবক্ষয় আজ দেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেখা যাচ্ছে। এর পেছনে পরিবার, সমাজ ও প্রতিষ্ঠান—তিনটিই দায়ী। শুধু পরীক্ষার রেজাল্ট নয়, শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ও ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়াটা এখন সময়ের দাবি।”

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুলকুতের রহমান বলেন, “আমরা শুধু দোয়া ও মিলাদ মাহফিল আয়োজন করেছি, যা দুপুর ১২টার মধ্যে শেষ হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা সাউন্ড সিস্টেম এনে গান পরিবেশন করে। অশ্লীল গান ও গাঁজা সেবনের বিষয়টি আমি জানতাম না। এখন বিষয়টি জানার পর সংশ্লিষ্টদের অভিভাবকসহ ডেকে এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে এমন অশালীনতা ও মাদক সেবনের ঘটনায় শিক্ষক, অভিভাবক ও সচেতন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।