রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১২ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১ সফর, ১৪৪৭ হিজরি

জুলাই বিপ্লব সুন্দর সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টি করেছে : মঈন খান

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, আজকে সে জুলাইয়ের যে বার্তা, তার সঙ্গে গণতন্ত্রের বার্তা যদি মিলিয়ে না নিতে পারি, তাহলে ২০২৪-এর জুলাই-আগস্টের বার্তাটি কোথায় হারিয়ে যাবে জানি না।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘মুক্তচিন্তা বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান যে বার্তা দিয়ে গেল’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি একটি সুন্দর সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। আমি যদি মুক্তচিন্তার সুযোগ নিয়ে প্রশ্ন করি যে, বিপ্লবটি শুরু হয়েছিল ১ জুলাই এবং শেষ হয়েছিল ৫ আগস্ট। আমরা তাকে কেন জুলাই বিপ্লব বলি। কেন জুলাই-আগস্ট বিপ্লব বলি না। আমি প্রশ্নের উত্তর দেব না। কারণ, প্রশ্নের উত্তর হয়তো অপ্রিয় হয়ে যেতে পারে। আমি আপনাদের অনুরোধ করব, আপনারা চিন্তা করবেন কেন এত বড় একটি বিপ্লব বাংলাদেশে একটি বিশাল পরিবর্তন এনেছে। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনকে দূর করে একটি সুযোগ উন্মুক্ত করে দিয়েছে। যাতে করে আমরা আবার গণতন্ত্রে ফিরে যেতে পারি। যদিও এখনো আমরা পুরোপুরি সেই সুযোগটার সৎ ব্যবহার করতে পারিনি। আমরা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে আমাদের সেই পদ্ধতিতে যেতে হবে। পদ্ধতিটি কী। সেটা হচ্ছে এ দেশের সত্যিকার মালিক জনগণ।

তিনি বলেন, ২৪-এর জুলাই-আগস্ট আমাদের কী বার্তা দিল, সেই বার্তাটি আমরা কি সত্যিকার অর্থে খুঁজে পেয়েছি, নাকি আমরা খুঁজতে গিয়ে পথ হারিয়েছি? সেই বিশ্লেষণ আজকে করতে হবে। ১৯৯০-এর শেষে একটি সামরিক শাসক যখন বাংলাদেশের মানুষের অধিকার এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করে নিয়েছিল। তখন আরেকবার রাজপথে জনগণ এবং গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল ২০২৪-এর মতো একইভাবে সেই সামরিক শাসককে দূর করেছিল। তখন আমরা দেখেছি যে, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মাত্র ৯০ দিনের ব্যবধানে কীভাবে বাংলাদেশের মানুষের হাতে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

তিনি বলেন, নিশ্চয়ই রাজনীতিকদেরও সমালোচনা করতে হবে। আমি যদি ভুল করি, আমাকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। একটি কথা মনে রাখবেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার যে পদ্ধতি সেটা হচ্ছে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন।

ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আজকে আমি সুইচ টিপে দিলাম। ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে সব মানুষ চলে গেল। আবার সুইচটা অন করে দিলাম। মুহূর্তে ৪০ বছরের নিচের সব নতুন প্রজন্ম চলে আসল। এভাবে কিন্তু বিশ্ব সমাজ ব্যবস্থা পরিচালিত হয় না। যদি কেউ মনে করেন নতুন প্রজন্ম এসেছে, তারা ইলেকট্রিক সুইচের মতো সুইচ টিপার ফলশ্রুতিতে এ দেশের সবকিছু পরিচালনা করবেন, আর আরেক প্রজন্ম সুইচ টিপলে যেমন লাইট অফ হয়ে যায় সেভাবে তারা অন্তর্নিহিত হয়ে যাবেন- সেভাবে কিন্তু দুনিয়া চলে না।

আয়োজক সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবুল কাসেম হায়দারের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আমেরিকার শাবানা স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া।

এতে আরও বক্তৃতা করেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, শাহমাখদুম ইউনিভার্সিটির ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক শামসুল হক, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এফ এ সোবহানি প্রমুখ।