এইচ এম প্রফুল্ল, খাগড়াছড়ি : শনিবার থেকে অবরুদ্ধ খাগড়াছড়ি। থমথমে পরিস্থিতি। জুন্ম ছাত্র-জনতার সহিংস কর্মসূচী ও সাধারন মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অনিদিষ্টকালের ১৪৪ ধারা বহাল রয়েছে। দোকানপাট বন্ধ, চলছে আভ্যন্তরীন ও দুর পাল্লা সড়কে যানবাহন। এতে বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবি মানুষ। এদিকে লাশ সৎকারের সুবিধার্থে ও আহতদের চিকিৎসার জন্য দুপুর ১২ টা থেকে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে অবরোধ শিথিলের কথা জানিয়েছে জুম্ম ছাত্র-জনতার মিডিয়া উইং। সহিংসতায় মামলার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন পুলিশ।
১৪৪ ধারা বহাল থাকায় পুরো শহর ফাঁকা। জান মালের নিরাপত্তায় বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ আমর্ড পুলিশ। এছাড়া খাগড়াছড়িতে জেলা সদরে মোতায়েন রয়েছে সাত প্লাটুন বিজিবি।
স্কুল ছাত্রী ধর্ষনের ঘটনার প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে আন্দোলন ও সহিংসতার জেলার গুইমারা তিন পাহাড়ি নিহতসহ জেলায় অন্তত অর্ধশতাধিক পাহাড়ি বাঙালি আহত হয়েছে। এর মধ্যে একজন মেজরসহ সেনাবাহিনীর ১৩ সদস্য ও ওসিসহ ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলা সদরে সেনাবাহিনীর গাড়ী ও এম্বুলেন্সে হামলা হয়েছে। জেলা সদরের স্বনির্ভর, মহাজন ও গুইমারায় প্রায় অর্ধশতাধিক দোকানপাটে হামলা, ভাংচুর ও বাড়ী-ঘরে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে ১৪৪ ধারা জারির কারণে খাগড়াছড়ি শহরের দোকানপাট শনিবার দুপুর থেকে বন্ধ রয়েছে। ভয় ও আতংকে জেলার আভ্যন্তরীন ও দুরপাল্লা সড়কে শনিবার থেকে সব ধরনের যারবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে সব শ্রেনী-পেশার মানুষ। অনেক পর্যটক এখনো আটকে আছে।
সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ খাগড়াছড়িতে সংঘটিত সহিংসতাকে পাহাড়ি-বাঙালির আস্থাহীনতার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ইন্ধন রয়েছে বলে দাবী করেছেন।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, সংঘটিত প্রত্যেক সহিংস ঘটনায় মামলা হবে। তিনি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের অনুরোধ জানান।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা বলেন, অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করা হলেও এক ধর্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি অন্য ধর্ষকদের গ্রেফতারে প্রশাসনকে সহযোগিতার অনুরোধ জানান। জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার সংঘটিত ঘটনা তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে জানিয়েছেন।
খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূইয়া, আওয়ামী লীগের পাতানো ফাঁদে পা না দিয়ে পাহাড় শান্ত রাখতে পাহাড়ি-বাঙালি নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রাখতে সকল মহলের সহনশীলতা প্রয়োজন মনে করেন সচেতন মহল।