শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৪ পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৭ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

দক্ষিণ সুদানে ড্রোন হামলায় ৮ বাস্তুচ্যুত নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দক্ষিণ কোরদোফান রাজ্যের অবরুদ্ধ শহর কাদুগলি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বুধবার একটি ড্রোন হামলায় অন্তত আট জন নিহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ কথা জানিয়েছে।

হামলাটি ঘটে কাদুগলি শহরের প্রায় ১৫ কিলোমিটার (৯ মাইল) উত্তরে কুরকাল এলাকায়। 

কাদুগলি বর্তমানে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও প্রায় ১৮ মাস ধরে প্রতিপক্ষ আধাসামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) শহরটি ঘিরে রেখেছে।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘কাদুগলি থেকে বাস্তুচ্যুত কিছু মানুষ কুরকাল গ্রামে পৌঁছানোর পর, তাদের ওপর একটি ড্রোন আঘাত হানে।’ 

এই প্রত্যক্ষদর্শীও নিহতদের সঙ্গে কাদুগলি ছেড়ে পালিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, এই হামলায় নিহতদের সবাই নারী।

নিরাপত্তাজনিত কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি ও আরেক প্রত্যক্ষদর্শী হামলার পর ঘটনাস্থলে আটটি লাশ দেখেছেন বলে জানান।

খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।

অক্টোবরে দারফুর অঞ্চলের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর এল-ফাশার থেকে সেনাবাহিনীকে হটানোর পরও সেখানে সেনাবাহিনীর শেষ ঘাঁটি ছিল। 

আরএসএফ এখন সম্পদসমৃদ্ধ কোরদোফান অঞ্চলের দিকে নজর দিয়েছে।

এই অঞ্চলটি উত্তরে রাজধানী খার্তুমসহ সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত এলাকা এবং পশ্চিমে আরএসএফ নিয়ন্ত্রিত দারফুরের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল।

এলাকাটির যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং গত মাসে জাতিসংঘ কাদুগলিতে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে। 

এএফপির সংগৃহীত তথ্যমতে, শহরের অনেক বাসিন্দা খাদ্যের জন্য বনাঞ্চলে খাবার খুঁজে বেড়াতে বাধ্য হচ্ছে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)-র একটি সূত্র এএফপিকে বলেন, ওই অঞ্চলের মানবিক পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত ভয়াবহ’। 

সূত্রটি আরও জানিয়েছে, বহু বাসিন্দা শহর ছাড়ার চেষ্টা করেছেন। তবে নিরাপত্তা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর তথ্য মতে, সোমবার ও মঙ্গলবার ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতার কারণে ৪৬০ জন কাদুগলি থেকে পালিয়ে গেছে।

এ ছাড়া মঙ্গলবার পর্যন্ত আগের ১০ দিনে দক্ষিণ কোরদোফান থেকে প্রায় ১ হাজার ৮৫০ জন বাস্তুচ্যুত মানুষ, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। 

এরা হেঁটে প্রতিবেশী সেনা-নিয়ন্ত্রিত হোয়াইট নাইল রাজ্যে পৌঁছান। 

স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, এই অসহায় মানুষগুলো ‘বেসামরিক এলাকায় আরএসএফ-এর হামলা থেকে বাঁচতে’ পালিয়ে এসেছেন।

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া সুদানের যুদ্ধ ইতোমধ্যে কয়েক দশ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে।

জাতিসংঘের মতে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে।