খেলা ডেস্ক
আর্জেন্টিনার ফুটবল নিয়ে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন সম্ভবত—লিওনেল মেসি ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলবেন কি না? মেসি নিজেই এ নিয়ে কথা বলেছেন এর আগে। গত বছর নভেম্বরে ইতালিয়ান সাংবাদিক ফ্যাব্রিজিও রোমানোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেসি জানিয়েছিলেন, ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলবেন কি না, তিনি এখনো নিশ্চিত নন। আগে বছরটা ভালোভাবে শেষ করতে চান। ২০২৬ বিশ্বকাপের পথে এগোতে চান প্রতিটি দিন ধরে ধরে।
আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি মেসির আগামী বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন গত মার্চে। ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ব্রাজিলকে হারানোর পর স্কালোনি বলেছিলেন, দেখা যাক কী হয়, এখনো তো হাতে সময় আছে। মেসির সিদ্ধান্ত মেসিকেই নিতে হবে বলে জানিয়েছিলেন স্কালোনি।
মেসি ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলবেন কি না, এই প্রশ্নের উত্তর এখনো মেলেনিএএফপি
ঘুরেফিরে সেই একই প্রশ্ন আবারও করা হয়েছিল মেসিকে। আর্জেন্টিনার সাবেক ডিফেন্ডার কিকে উলফের অনুষ্ঠান ‘সিম্পলি ফুটবল’কে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ইন্টার মায়ামি তারকা। ইএসপিএনে দীর্ঘ ২৪ বছর এ অনুষ্ঠান চলার পর এখন ইউটিউবে প্রচারিত হচ্ছে। ইন্টার মায়ামি কমপ্লেক্সের ভেতরে কিকে উলফ এবং তাঁর ছেলে পেদ্রোর নেওয়া এই সাক্ষাৎকারে ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে কথা বলেছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি, ‘২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে আমার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে এ বছরটা গুরুত্বপূর্ণ হবে। অবশ্যই আমি বিশ্বকাপ এবং সেখানে থাকা নিয়ে ভাবছি। কিন্তু আমি প্রতিটি দিন ধরে ধরে এগোচ্ছি। সেখানে (২০২৬ বিশ্বকাপ) আমি থাকতে পারব কি না, এ বিষয়ে আমার নিজের সঙ্গে আমাকে সৎ থাকতে হবে।’
মেসি জানিয়েছেন, তিনি ‘কোনো লক্ষ্যস্থির করতে চান না।’ শারীরিকভাবে কেমন অনুভব করছেন সেটা ৩৭ বছর বয়সী এ ফরোয়ার্ডের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ২০২২ বিশ্বকাপ জয় নিয়ে মেসি বলেছেন, ‘এর চেয়ে বেশি কিছু চাইতে পারতাম না। শুধু বিশ্বকাপটাই ছিল না। আমি সবকিছু জিতেছি। সবকিছুই অর্জন করেছি। বিশ্বকাপ বার্সেলোনায় আছে, সেখানে রাখা আছে। (আমার) সব ট্রফি ও পুরস্কার বার্সেলোনায়।’
২০১৪ বিশ্বকাপেরও ফাইনালে খেলেছে আর্জেন্টিনা। হারতে হয় জার্মানির কাছে। এ নিয়ে মেসি বলেছেন, ‘২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারাটা আমার জন্য যন্ত্রণার ছিল। পরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় সবকিছু সহনীয় হয়েছে। দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টেছে। আমি দুটি বিশ্বকাপ জিততে পারতাম, তবে আমার বিশ্বকাপ আছে।’
২০১১ কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ের বিপক্ষে টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম কিকটি মেসির। ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও টাইব্রেকারে দলের হয়ে প্রথম শটটি নেন মেসি। এভাবে চিলির বিপক্ষে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে দুটি কোপা আমেরিকা ফাইনালের টাইব্রেকার, ২০২১ কোপা আমেরিকায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে টাইব্রেকার, ২০২২ বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টাইব্রেকার, ফাইনালের টাইব্রেকার এবং ২০২৪ কোপা আমেরিকা কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরের বিপক্ষে টাইব্রেকারেও আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম শটটি নেন মেসি। কেন? এ প্রশ্নের উত্তরে মেসি বলেছেন, ‘সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিতে পেনাল্টি শুটআউটে আমি সব সময়ই প্রথমে যাই, সব সময়ই এটা করেছি।’
বয়সভিত্তিক ও মূল দল মিলিয়ে বার্সেলোনায় ২১ বছর থাকার পর ২০২১ সালে ক্লাবটি ছেড়ে পিএসজিতে যোগ দেন মেসি। সেখানে দুই মৌসুম খেলে ২০২৩ সালে যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে। মেসি জানিয়েছিলেন, পিএসজি ছাড়ার পর বার্সায় ফেরার ইচ্ছা তাঁর ছিল, ‘বার্সেলোনায় ফিরতে চেয়েছিলাম, যেখানে আমি সব সময় থাকতে চেয়েছি। কিন্তু এটা সম্ভব হয়নি। এরপর যুক্তরাস্ট্রে বসবাস করে এমএলএসে খেলার সিদ্ধান্তটি পারিবারিক, যে ক্লাবটিতে খেলছি তারা বেড়ে উঠছে এবং দারুণ কিছু জয়ের স্বপ্ন দেখে। আমি ইউরোপে আর কোনো দলে যোগ দিতে চাইনি। এটা কখনো মনেও আসেনি।’
মেসিকে ২০২৬ বিশ্বকাপে দেখতে চান অনেক ফুটবলপ্রেমীএএফপি মেসি এ নিয়ে যোগ করেন, ‘আমরা দুটি জটিল বছর পেরিয়ে এসেছিলাম, বার্সেলোনায় যেকোনোভাবে হোক থেকেছি এবং প্যারিসে পরিবার ভালো ছিল। কিন্তু সেখানে প্রতিদিনের জীবন ও অনুশীলন ভালো লাগেনি। আমরা চেয়েছিলাম পরিবারকে ভালো রাখতে এবং আমি যেটা পছন্দ করি সেটা উপভোগ করতে।’