নিজস্ব প্রতিবেদক : পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিনের ছুটি শেষে রোববার (১৫ জুন) থেকে খুলেছে বাংলাদেশ সচিবালয়সহ দেশের সব সরকারি অফিস, আদালত, ব্যাংক, বিমা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ বিরতির পর কর্মস্থলে ফিরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ফিরে এসেছে চেনা কর্মচাঞ্চল্য ও প্রাণচাঞ্চল্য।
রোববার সকাল ৯টা থেকে সচিবালয়ে আসতে শুরু করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সকালবেলায় উপস্থিতির হার কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সব বিভাগে কর্মীদের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়। একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময়, কোলাকুলি আর ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মধ্য দিয়েই শুরু হয় প্রথম কর্মদিবস।
অনেক কর্মকর্তা ঈদের ছুটি কাটিয়ে সরাসরি গ্রামের বাড়ি থেকে ব্যাগ হাতে অফিসে যোগ দেন। তাদের কথাবার্তা ও আচরণে ছিল ঈদের আমেজের রেশ। মন্ত্রণালয়গুলোতেও শুরু হয়েছে স্বাভাবিক কার্যক্রম।
ঈদের পর প্রথম দিনই বিভিন্ন উপদেষ্টাদের সচিবালয়ে এসে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক করেছেন সকালেই। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নানা বিষয় নিয়ে অফিসের কার্যক্রম শুরু করেন।
চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় দেশে নির্বাচনকালীন সরকার থাকায় অধিকাংশ উপদেষ্টা ঈদের সময় ঢাকায় অবস্থান করেছেন। এ কারণে রোববার সচিবালয়ের প্রায় সব মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টাদের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।
সচিবালয়ের প্রবেশপথে দর্শনার্থীদের প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা ছিল না। অনেকে পাস সংগ্রহ করে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন। সচিবালয় চত্বরে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান পূর্ণ হয়ে যায় সকালেই।
সরকারি সূত্রে জানা যায়, এবারের ঈদুল আজহা উদযাপিত হয় শুক্রবার (৭ জুন)। ছুটি শুরু হয়েছিল ৫ জুন (বুধবার) থেকে, যা শেষ হয় ১৫ জুন (রোববার)। ছুটির আগে দুইটি শনিবার—১৭ মে ও ২৪ মে—অফিস খোলা রেখে এই ১০ দিনের ছুটির সমন্বয় করা হয়।
ঈদের আগে ৬ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ১১ ও ১২ জুন (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করা হয়। ৭ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি হয়।
ছুটির শেষ দিনে (শনিবার, ১৪ জুন) এবং রোববার সকালেও রাজধানীমুখী বাস, ট্রেন ও লঞ্চে যাত্রীদের ব্যাপক চাপ লক্ষ করা যায়। শহরে প্রবেশ করে ব্যক্তিগত গাড়ি ও গণপরিবহন, টার্মিনালগুলোতে ভিড় করে কর্মজীবী মানুষ।
সরকারি হিসেবে দেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই ছুটি শেষে যথাসময়ে কর্মস্থলে ফিরে এসেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
দীর্ঘ এ বিরতির পর রোববার সচিবালয়সহ দেশের সরকারি দফতরগুলোতে অফিস কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে—যা আগামীর ব্যস্ততা ও সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
