আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দীর্ঘ জীবনের কথা আসলেই ভেসে ওঠে জাপান, কোস্টারিকা, গ্রিস কিংবা ইতালির নাম। এসব জায়গাকে বলা হয় বিশ্বের ‘ব্লু জোন’। এখানের মানুষ অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় বেশি দিন বাঁচেন। গত দুই বছর আগে এ তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে সিঙ্গাপুরের নাম।
সিঙ্গাপুরের মানুষ বিশ্বের ষষ্ঠ ব্লু জোন এবং প্রথম ‘ব্লু জোন ২.০। অন্য ব্লু জোনগুলোতে মানুষ দীর্ঘ জীবন পেয়েছে মূলত তাদের উন্নত জীবনযাপন, স্বাস্থ্যকর খাবার আর ইতিবাচক সমাজব্যবস্থার কারণে। ফলে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম সুস্থ জীবনযাপন করছে। কিন্তু সিঙ্গাপুরের প্রসঙ্গ ভিন্ন।
সেখানে মানুষের দীর্ঘায়ুর কারণ সরকারের স্বাস্থ্যনীতি, নগর পরিকল্পনা আর পরিবেশ রক্ষার মতো বিষয়গুলোতে বিনিয়োগের ফল। দেখা যায়, সিঙ্গাপুর দেশটি স্বাধীনতার পর থেকে অবিশ্বাস্য পরিবর্তন এসেছে।
১৯৬০ সালে সিঙ্গাপুরে জন্ম নিলে একজন মানুষের গড় আয়ু হতো মাত্র ৬৫ বছর। বিবিসি জানিয়েছে, স্বাধীনতার ৬০ বছর পর এখন দেশটির মানুষের গড় আয়ু দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৬ বছরে।
শুধু তাই নয়, ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে শতবর্ষী মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। অর্থাৎ সিঙ্গাপুর কেবল আয়ু বাড়ায়নি, বরং জীবনযাপনকে আরও স্বাস্থ্যকর করে তুলেছে।
সিঙ্গাপুর পরিবেশও বড় ভূমিকা রেখেছে। নগরায়ণকে এমনভাবে সাজিয়েছে তুলেছে, যাতে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের যোগসূত্র অটুট থাকে। সাংস্কৃতিতেও পিছিয়ে নেই সিঙ্গাপুর। বহু সাংস্কৃতিক জীবনধারা গড়ে উঠেছে। শৃঙ্খলা ও উন্নয়নের পাশাপাশি বহু সাংস্কৃতিক উৎসব ও খাবারের জন্যও বিখ্যাত এখন সিঙ্গাপুর।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, দেশটির সুপরিকল্পিত স্বাস্থ্যনীতি। ফিন্যান্স ব্লগ ‘ডলার ব্যুরো’র লেখক ফিরদাউস সিয়াজওয়ানি বলেছেন, সিঙ্গাপুরে জনস্বাস্থ্যের পরিবর্তনটা আমি ছোটবেলা থেকে দেখেছি। ধূমপান ও মদপানের ওপর উচ্চ কর আর প্রকাশ্যে ধূমপানের কড়া নিষেধাজ্ঞা শুধু ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের উন্নতি করেনি, পুরো পরিবেশকেই পরিষ্কার ও নিরাপদ করে রেখেছে।