মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৪ ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪ সফর, ১৪৪৭ হিজরি

দেশ গঠনে শিক্ষার্থীদের দক্ষ জনবল হতে হবে : ইউজিসি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সততা ও সাহসিকতার সবচেয়ে বড় উদাহরণ জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান।

এই চেতনা ধরে রেখে দেশ ও জাতি গঠনে নতুন শিক্ষার্থীদের নিজেদের দক্ষ জনবল হয়ে ওঠার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিজের পরিবার মনে করে সেইভাবে সবার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে।

সোমবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গ্রামীণফোনের সহায়তায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউনিসেফ যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

রাজধানীর লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি সারাদেশের নয় শতাধিক কলেজ যুক্ত হয়। এসময় নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানান ইউজিসি চেয়ারম্যান।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে তথ্য প্রযুক্তি ও একাধিক ভাষায় প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে স্নাতক, স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর শ্রেণির সিলেবাস সংস্কার এবং আইসিটি ও ইংরেজি বিষয় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেন, বর্তমান জীবনযাত্রায় তথ্যপ্রযুক্তি অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। তবে সাইবার বুলিং থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

আরেক বিশেষ অতিথি বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি মিসেস রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, আজ থেকে শুরু হলো ইউনিসেফ ও ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগ। গর্বিত অংশীদার হিসেবে ইউনিসেফ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তরুণদের এমন দক্ষতা, যোগাযোগ ও সুযোগ প্রদানে, যা তাদের সফলভাবে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে সহায়তা করবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, দেশের উচ্চশিক্ষার ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ করে গড়ে তুলতে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই ও ডেটা সায়েন্স-এর ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

এজন্য দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, অধিভুক্ত কলেজে ক্যারিয়ার ক্লাব গঠন এবং মাল্টি ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউট ও সাইবার সিকিউরিটি ল্যাব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে প্রথম পর্যায়ে ৫০ হাজার ছাত্রীকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রশিক্ষণ পাবে ছাত্ররা।

তিনি বলেন, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে পরীক্ষা পদ্ধতি সংস্কারের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যার ফলে আশা করা যায় ২০২৬ সালের মধ্যে সেশন জট ৭০/৮০ শতাংশ কমে আসবে।

অধ্যাপক আমানুল্লাহ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজের শহিদ শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের পরিবারকে আর্থিক অনুদান দেয়া হয়েছে। এছাড়া জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের স্বজনদের বিনা বেতনে পড়াশুনার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। জুলাই শহিদদের স্মরণে কলেজ শিক্ষার্থীদের বৃত্তিও প্রদান করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

পরে সাইবার সেফটি গেমস উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রশিক্ষণ দপ্তরের পরিচালক মোছা. সালমা পারভীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত ডিন ড. মো. আশেক কবির চৌধুরী এবং ভোট অফ থ্যাঙ্কস জানান লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহানারা জামান।

অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।