মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১ পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ টঙ্গী তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা

টঙ্গি প্রতিনিধি: গাজীপুরের টঙ্গী তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে পুরো শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার সকালে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে গভর্নিং বডি এ সিদ্ধান্ত জানায়। এতে শিশু শ্রেণি থেকে কামিল পর্যন্ত সব ধরনের ক্লাস বন্ধ এবং আলিম দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছিলেন। বেতন বৃদ্ধি, অতিরিক্ত পরীক্ষার ফি, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা এবং স্কলারশিপ চালুর দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে আলিম দ্বিতীয় বর্ষের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। পরে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও এতে যোগ দেন।

আন্দোলনের মধ্যে দুপুরের দিকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। অভিযোগ রয়েছে—আন্দোলন থামানোর চেষ্টা করতে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। এতে একাধিক শিক্ষার্থী আহত হয় এবং উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করে। ঘটনার পর গভর্নিং বডির প্রধান ড. কোরবানি আলী অভিযুক্ত তিন শিক্ষক—আতিকুর রহমান, সিবগাতুল্লাহ ও কামরুল ইসলাম—কে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাময়িকভাবে বহিষ্কারের নির্দেশ দেন। এতে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানা গেছে।

তবে রাতেই নতুন করে উত্তাপ ছড়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা পোস্ট করে জানান, বহিষ্কৃত শিক্ষক আতিকুর রহমান তাঁদের বিভাগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন শিক্ষক; তার বহিষ্কার শিক্ষা কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ফলে বুধবার সকালে বিজ্ঞান বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী একাডেমিক ভবনের নিচে অবস্থান নিয়ে বহিষ্কারাদেশ পুনর্বিবেচনা ও বাতিলের দাবি তোলে। তারা অভিযোগ করে, মঙ্গলবার শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত নিতে চাপ দেওয়া হয়েছে, যা শিক্ষকদের মর্যাদাহানিকর।

বহিষ্কারাদেশ বাতিলের দাবিতে ওইদিন শিক্ষার্থীরা গণস্বাক্ষর কর্মসূচিও চালায়। এতে কয়েকশ শিক্ষার্থী স্বাক্ষর প্রদান করেন। পরে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মাদ্রাসার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়—গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ ড. হেফজুর রহমান বলেন, “গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাময়িকভাবে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেপরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া হবে।”